নীলগঞ্জ বিস্ফোরণে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার পরদিনই ২ আধিকারিককে বদলি করেছে তাঁর প্রশাসন। কিন্তু তার পরও এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের অস্বস্তি যাচ্ছে না। একের পর এক দলীয় নেতা দায়ী করছেন পুলিশকেই। যেমন এবার নীলগঞ্জ বিস্ফোরণের জন্য পুলিশের নিচুতলার একাংশকে দায়ী করলেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
বৃহস্পতিবার নিজের লোকসভা কেন্দ্রের খড়দায় এক সভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন সৌগতবাবু। সেখানে তিনি বলেন, ‘পুলিশের একাংশের অবহেলা ছিল। পুলিশের নিচু তলার কিছু আধিকারিক এজন্য দায়ী। পুলিশকে আরও কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছিলেন, যত বেআইনি বাজি কারখানা আছে খুঁজে বার করো। তার পরও কী করে এত বড় বাজি কারখানা রয়ে গেল তার জবাব পুলিশকেই দিতে হবে’।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সৌগতবাবু ফের টিকিট পাবেন কি না তা নিয়ে দলের অন্দরেই জল্পনা চলছে। এর মধ্যে মাঝেমাঝেই দলের কাছে অস্বস্তিকর একম সব মন্তব্য করছেন তিনি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, টিকিট পাওয়া মুশকিল বুঝে শেষ বেলায় তৃণমূলের বিবেক হয়ে উঠতে চাইছেন সৌগত রায়।
গত ১৮ অগাস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠনে কলকাতায় মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির সামনে সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেউ কেউ বেআইনি কাজ করছেন এবং পুলিশ সেটা চোখ বুজে দেখছে। লোকাল থানায় যাঁরা দায়িত্বে আছেন তাঁরা মাক্সিমাম কী করছেন, সেটা আর বললাম না!’ স্থানীয়দের অভিযোগ, বারবার অভিযোগ করেও লাভ হয়নি। উলটে বেআইনি বাজি কারখানার প্রতিবাদ করলে ভুয়ো গাঁজা কেস, রেপ কেস দিয়ে তুলে নিয়ে যেত পুলিশ।
গত রবিবার ২৪ অগাস্ট সকাল দশটা নাগাদ বারাসত - বারাকপুর রোডের পাশে নীলগঞ্জের মোচপোল গ্রামে সামসুল আলির বাড়িতে বেআইনি বাজি কারখানায় প্রবল বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের অভিঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বাড়িটি। মৃত্যু হয় মোট ৯ জনের। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি। পুলিশকে মোটা টাকা তোলা দিয়ে সেখানে বেআইনি বাজি কারখানা চালাত কেরামত আলি নামে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা এক ব্যক্তি। এর পর এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৭০ টন নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ২ জনকে গ্রেফতার করেছে দত্তপুকুর থানার পুলিশ।