সাপে কামড়ে ছিল অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে। চিকিৎসকের দ্বারস্থ না হয়ে ওঝার দ্বারস্থ হয়েছিলেন পরিবার। আর তার খেসারত দিতে হল পরিবারকে। পরিবারের কুসংস্কারের জেরে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল ছাত্রীর। ঘটনাটি নদিয়ার পলাশীর গোবিন্দপুর গ্রামের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পরে ওই ছাত্রীকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, সেখানে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর। মৃত ছাত্রীর নাম সান্তনা মাঝি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় সান্তনাকে সাপে কামড়ে দিয়েছিল। প্রচন্ড জ্বালায় ঘুম ভেঙে যায় সান্তনার। পরে পরিবারের লোকেরাও বুঝতে পারেন যে তাকে সাপে কামড়েছে। এরপর প্রথমে তাকে পলাশী গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, কয়েকজন গ্রামবাসীর পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা তাকে পাগলাচণ্ডীর সাজাপুরে ওঝার কাছে নিয়ে যান। সাপের কামড়ের কিছুক্ষণ পরে প্রথমে বমি এবং পরে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিল ওই ছাত্রী। কিন্তু, ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। এরপর দেরি না করে পরিবারের লোকেরা তাকে নিয়ে যান মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সান্তনার দাদা রাঘব মাঝি জানান, ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি তার বোনকে জরিবুটি খাইয়েছিলেন। কিন্তু, তাতে আরও অবস্থা খারাপ হয়ে যায় তার বোনের। এরপর মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসকরা একটি ইনজেকশন দেন। তারপরেও সন্তনাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে গত রবিবার মশারি না টাঙিয়েই সকলে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। আর তাতেই এই বড় বিপদ হয়ে গেল। প্রসঙ্গত, সাপের কামড়ে হাসপাতালে না গিয়ে ওঝার দ্বারস্থ হওয়ার ঘটনা গ্রামাঞ্চলে প্রায়ই ঘটে থাকে।