হঠাৎ ভোরবেলায় ফেসবুক লাইভ। সেখানে দেখা যাচ্ছে, একটা ঘরে বসে কাঁদছেন এক যুবক। আর বলছেন, আর কিছুক্ষণ পরেই সব শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ তিনি নিজেকে শেষ করে দেবেন। আত্মহত্যা করবেন। কারণ তিনি বিজেপি করেন বলে তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে শেষ করে দেওয়া হবে গোটা পরিবারকেও। সেই ফেসবুক লাইভ চলে ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড। আর সেখানে তিনি দেখাচ্ছেন সব ব্যবস্থা প্রস্তুত। হাড়হিম করা ঘটনা ঘটেছে হুগলিতে।
ঠিক কী ঘটেছে হুগলিতে? স্থানীয় সূত্রে খবর, যথন এই ফেসবুক লাইভ চলছিল তখন কেউ দেখেননি। পরে সকালবেলায় বন্ধুবান্ধবরা এই দেখে হুগলির চুঁচুড়ার কেওটা মিলিটারি কলোনির বাসিন্দা তথা বিজেপি কর্মী ২৮ বছরের অভিষেক চৌধুরীর বাড়িতে পৌঁছয়। রাতে ছেলে ঘুমোচ্ছে বলেই ধরে নিয়েছিলেন বাবা–মা। কিন্তু দরজা ভাঙতেই দেখা যায় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। তখন তাঁকে উদ্ধার করে ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঠিক কার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে? এখানে ‘আমরা কজন’ ক্লাবের সম্পাদক কুণাল সরকারের বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভে অভিযোগ তুলেছিলেন অভিষেক চৌধুরী। যদিও স্থানীয় ক্লাবের সম্পাদক কুণাল সরকার কিছু বলতে চাননি। এই ক্লাবের সদস্য পঙ্কজ দাস বলেন, ‘কুণাল অত্যন্ত ভাল ছেলে। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে তিনি যুক্ত নন। অভিষেক কী অভিযোগ করেছেন বলতে পারব না। তবে আমাদের ক্লাবের সঙ্গে অভিষেকের দাদাও যুক্ত।’ যদিও পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে।
কী বলছে বিজেপি–তৃণমূল কংগ্রেস? এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি নেতা সুরেশ সাউ বলেন, ‘অভিষেক হুগলি মণ্ডলের কর্মী ছিলেন। আমরা জানতে পেরেছি ওঁকে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছিল। আমরা পুলিশ–প্রশাসনের কাছে আবেদন করব এই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে।’ আর চুঁচুড়ার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মজুমদার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘বিজেপি, তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিআইএম যে কোনও দল করা গণতান্ত্রিক অধিকার। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হোক সত্যি কী ঘটেছে।’