ফের বাঘের আতঙ্ক দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে। আতঙ্কে কার্যত ঘুম উড়েছে এলাকাবাসীদের। গত দুদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বাঘের চাপ পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে। তাতে স্থানীয়দের আশঙ্কা লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়েছে। খবর পাওয়ার পরেই সেখানে ছুটে আসেন বনদফতরের কর্মীরা। দুদিন ধরে বাঘ খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। এমনকী জাল পাতাও হয়েছিল। কিন্তু, বাগে আনা যায়নি দক্ষিণরায়কে। সেই জাল ছিঁড়েই নাকি পালিয়ে গিয়েছে সেই বাঘ। তাতে স্থানীয়দের আতঙ্ক আরও বেড়েছে। কুলতলির মৈপিঠ এলাকার গৌড়চক এলাকার গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: যেন লুকোচুরি খেলছে কুলতলির বাঘ, এবার অতর্কিতে হামলা, জখম ১ গ্রামবাসী
স্থানীয়দের দাবি, শনিবার রাতেও এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে। ফলে তাদের অনুমান বাঘটি এলাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। রাতে এলাকায় পুলিশকর্মীর পাশাপাশি বন কর্মীরা মোতায়েন ছিলেন। তারা এখনও বাঘটিকে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বনকর্মীরা যেখানে জাল পেতে ছিলেন সেই জাল ছেঁড়া অবস্থায় রয়েছে এবং তার আশেপাশে নখের আঁচড়ের দাগ রয়েছে। ফলে মনে করা হচ্ছে বাঘটি জাল ছিঁড়েছে। জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে কুলতলি ব্লকের ভুবনেশ্বরী গৌড়ের চক এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপরেই স্থানীয়দের মধ্যে বাঘের আতঙ্ক ছড়ায়। ঘটনায় পুলিশ এবং বনদফতরকে খবর দেন স্থানীয়রা। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে পৌঁছে যায় মৈপিঠ কোস্টাল থানার পুলিশ। বন কর্মীরাও সেখানে পৌঁছন। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজি পরে বাঘের কোনও সন্ধান মেলেনি। তবে একাধিক জায়গায় পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে বলে বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে। তারপরে বনদফতরের তরফে বাঘ ধরতে গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় জাল পাতা হয়। এমনকী ড্রোনের সাহায্যেও নজরদারি চালান বনকর্মীরা। এছাড়াও মাইকিং করে স্থানীয়দের সতর্ক করছে বনদফতর। এই অবস্থায় বাঘের আতঙ্কে কার্যত বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা।
প্রসঙ্গত, কুলতলিতে বাঘের আতঙ্ক এই প্রথম নয়। এর আগেও বেশ কয়েকবার কুলতলির বেশ কিছু গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। গত মাসেই ইন্দ্রপুরে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। কার্যত আতঙ্কে ঘুম উড়ে গিয়েছিল বাসিন্দাদের। সন্ধের পর বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ করে দিয়েছিলেন আতঙ্কিত স্থানীয়রা। তারও কিছুদিন আগে ইন্দ্রপুরের পার্শ্ববর্তী বিধাননগরেও বাঘের দেখা মিলেছিল।সে ক্ষেত্রে একশোরও বেশি বনকর্মী বিধাননগর এলাকাকে জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেছিলেন। কিন্তু, তখনও আর দেখা যায়নি বাঘকে।