আতঙ্কে ঘুম উড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ বিধানসভার নদাভাঙ্গা মাঝেরপাড়া এলাকার বাসিন্দাদের। রাতের অন্ধকারে তো বটেই, এমনকী দিনের আলোতেও কার্যত বাড়ির বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন বাসিন্দারা। কারণ এই গ্রামে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, বাঘের মতো একটি প্রাণীকে তাঁরা ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন। এমনকী যে বন্যপপ্রাণীকে দেখা গিয়েছে তার পায়ের ছাপও বাঘের মতোই । ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় বন দফতরকে খবর দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। তবে এখনও পর্যন্ত সেখানে বাঘের দেখা মেলেনি বলেই জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: কাদার মধ্যে কীসের পায়ের ছাপ ওটা! বাঘের আতঙ্কে সিঁটিয়ে কাকদ্বীপের গ্রাম
গ্রামবাসীদের দাবি, মাঝেমধ্যেই প্রাণীটির গর্জনে শোনা যাচ্ছে। তাতেই আতঙ্কে শিউরে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। এদিকে, খবর পাওয়ার পরে বনদফতরের কর্মীরা রাতভর প্রাণীটির খোঁজে এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছেন। কিন্তু, তাঁরা ওই বন্যপ্রাণীকে কোনওভাবে খুঁজে পাননি। এই অবস্থায় প্রাণীটিকে বাঘ বলে মানতে নারাজ বনদফতর। এ বিষয়ে বনদফতরের নামখানার ফরেস্ট অফিসের বিট অফিসার নিখিল কুমার ভুঁইঞা জানান, যে প্রাণী নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে সেটি বাঘ নয়। কারণ এত দূরে বাঘ আসার সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া যে পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে সেটি বাঘরোল বা মেছো বিড়ালের পায়ের ছাপ হতে পারে। কিন্তু, গ্রামবাসীদের দাবি যে পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে তা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বড়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন গ্রামে বাঘ চলে আসার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। অতীতে এর আগেও দক্ষিণ ২৪ পরগণার একাধিক গ্রামে বাঘ ঢুকে পড়েছিল। পরবর্তীতে লোকালয়ে যাতে বাঘ চলে আসতে না পারে তার জন্য বনাঞ্চলে সীমানা ঘিরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বনদফতর। এছাড়াও, বাঘের হামলার প্রায়য় মৎজীবীদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে। কয়েকদিন আগেই বাঘের হামলায় মৃত্যু হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক মৎস্যজীবীর। অন্যান্য মৎস্যজীবীদের সঙ্গে তিনি সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে ছিলেন। সেই সময় বাঘ তাঁর উপর হামলা চালায়। এছাড়া গত ফেব্রুয়ারি মাসে সুন্দরবনের বাঘনা রেঞ্জ অফিসের ঝিলা ৫ নম্বর জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক মৎস্যজীবীর। বাঘের মৃত্যু হওয়া ওই মৎস্যজীবীর নাম ননীগোপাল মণ্ডল। অন্যদিকে, গত জুলাই মাসে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল অনেশ্বর ফকির নামে এক মৎস্যজীবীর। তিনি কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। সেই সময় বাঘ তার উপর হামলা চালিয়েছিল। এছাড়াও অতীতে বহু মৎস্যজীবী বাঘের শিকার হয়েছেন।