দক্ষিণরায়দের জন্য রাজ্যে আরও একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চালু হতে চলেছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ঝড়খালিতে এই হাসপাতাল গড়ে তোলা হচ্ছে। এই হাসপাতালে মানুষের চিকিৎসা হবে না। এখানে বাঘেদের চিকিৎসা করা হবে। বহু বাঘ চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। অথচ তাদের চিকিৎসা করলে আবার তারা জঙ্গলে ফিরে যেতে পারবে। এমন সব ভেবেই ঝড়খালি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে এই হাসপাতাল ভবন তৈরি করা হয়েছে। চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে আধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাই এই হাসপাতালকে ‘টাইগার রেফারেল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল’ নামকরণ করা হয়েছে।
কেন এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে? ঝড়খালি, বাসন্তী, সুন্দরবন, সজনেখালি–সহ নানা জায়গায় বাঘের আনাগোনা। আবার শিকারিরা বাঘ মারতে তৎপর। কিন্তু দেখা যায়, অনেক সময় বাঘ গুলিতে আঘাত পেলেও মরেনি। তখন তার চিকিৎসা করার ব্যবস্থা করা হবে এখানে। শুধু তাই নয়, জঙ্গলে থাকার ফলে নানা অসুখ করে মারা যায় বাঘ মামারা। সেখানে উপযুক্ত চিকিৎসা করলে বাঘটি বেঁচে যেতে পারে। তাছাড়া মানুষ বাঘের হাত থেকে বাঁচতে নানা ফাঁদ পাতে। তাতেও আক্রান্ত হয় দক্ষিণরায়রা। বন দফতর তাদের নিয়ে গেলেও সঠিক চিকিৎসা দিতে পারে না। এই হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসা মিলবে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এখন এই ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে তিনটি বাঘ আছে। আর ১১টি কুমির আছে। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা এখানে করা হয়েছে। কিন্তু এখানে আরও আধুনিক মানের চিকিৎসা পরিষেবা চালু করতে চায় রাজ্য সরকার। তাই এই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে তোলা হচ্ছে দক্ষিণরায়দের জন্য। তবে শুধু বাঘ নয়, আরও অন্যান্য বন্য প্রাণীদের চিকিৎসা করা হবে এখানে। এমনকী দেশের অন্যান্য রাজ্য থেকেও জীবজন্তুদের এখানে ভর্তি করা যাবে। তাতে কোনও সমস্যা হবে না। এই চিকিৎসা পরিষেবা দিতে এবং হাসপাতাল চালু করতে যা প্রয়োজন হবে তার তালিকা রাজ্য সরকারের কাছে আগেই পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘স্পেশাল টিম’ তৈরি করল রাজ্য সরকার, বাজি কারখানা নিয়ে নয়া পদক্ষেপ নবান্নের
কেমন চিকিৎসা হবে এখানে? এখানে বাঘ–সহ অন্যান্য বন্য জীবজন্তুর এক্স–রে থেকে শুরু করে ইসিজি, ইউএসজি, অপারেশন থিয়েটার সব ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থাই এখানে থাকবে। এখানে বিশেষ ধরনের হাইড্রোলিক টেবিল আনা হচ্ছে। তাতে বন্যপ্রাণীদের শুইয়ে চিকিৎসা করা যাবে। জীবজন্তুদের আনার জন্য একটি বিশেষ ধরনের অ্যাম্বুলেন্সও রাখা হচ্ছে। এই হাসপাতালে চারজন চিকিৎসক ও একজন সার্জন থাকছেন। প্যাথলজিস্ট, ফার্মাসিস্ট পদেও নিয়োগ করা হবে। হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা পশু চিকিৎসক আশুতোষকুমার বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘ওয়েস্টবেঙ্গল জু অথরিটির নেতৃত্বে গোটা কাজটি হচ্ছে। অনেকেই এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। এবছর শেষের আগে হাসপাতালটি চালু করার চেষ্টা হচ্ছে।’