‘শুভেন্দু অধিকারীই অভিভাবক, তাঁর সঙ্গেই থাকব।’ এই মন্তব্য করে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন বাঁকুড়ায় তৃণমূলের সহ–সভাপতি তথা একাধিক দপ্তর সামলানো প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। যদিও দল ছেড়েও স্বস্তিতে নেই শ্যামাপ্রসাদ। কারণ, বিষ্ণুপুরের বিজেপি নেতা–কর্মীরা রীতিমতো বিক্ষোভ করে দাবি তুলেছেন, শ্যামাপ্রসাদকে দলে নেওয়া যাবে না। তবে তাঁর সঙ্গে দল ছাড়লেন আরও তিন যুব নেতা। পুরুলিয়া জেলায় দলের সাধারণ সম্পাদক তথা রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়ও পদত্যাগ করেছেন। শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়ার পরই জেলায় জেলায় ঘাসফুল সংগঠনে ভাঙন ক্রমশই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার কালীঘাটে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।
শ্যামাপ্রসাদের অনুগামী বিষ্ণুপুর পুরসভার তিন কাউন্সিলর–সহ বেশ কয়েকজন নেতাও তৃণমূল ত্যাগ করেছেন। শ্যামাপ্রসাদের কথায়, ‘আমি দলের সহ–সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। দলও ছেড়েছি। শুভেন্দু অধিকারী আমার নেতা, আমার অভিভাবক। আমি শুভেন্দু অধিকারীর সৈনিক। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিলে, আমিও তাঁর সঙ্গেই গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাবো।’ আদতে কংগ্রেসি রাজনীতির পথ ধরে উঠে আসা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এর আগে তিনটি দপ্তরের দায়িত্ব সামলেছেন। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে তিনি যোগদান করার পর বাঁকুড়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি ছিলেন এই জেলার তৃণমূলের সভাপতিও। কিন্তু বরাবর শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বর্ষীয়ান নেতা তাঁরই পথে হেঁটে তৃণমূল ছাড়লেন।
এদিন সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘শুভেন্দুর সঙ্গে যে বঞ্চনা হল, তা মেনে নেওয়া যায় না।’ উল্লেখ্য, গত ৩৪ বছর ধরে কখনও কংগ্রেস, কখনও তৃণমূলের হয়ে বিষ্ণুপুর পুরসভার চেয়ারম্যান থেকেছেন শ্যামাপ্রসাদ। বিধায়কের পাশাপাশি আবাসন, বস্ত্র, নারী ও শিশুকল্যাণের মতো দফতরের মন্ত্রী থেকেছেন। তবে ২০১৬ সালে বাম–কংগ্রেস জোটপ্রার্থীর কাছে হেরে যান শ্যামাপ্রসাদ। তার পরেও পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। পুরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাঁকে পুর–প্রশাসকের পদে বসিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু কয়েকদিন আগে তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেয় দল। তার পরেই শ্যামাপ্রসাদের দলত্যাগ। তবে বাঁকুড়া বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে তুমুল শোরগোল দেখা দেয়। দলীয় সদস্যরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় দুর্নীতিগ্রস্ত। তাই তাঁকে বিজেপিতে নেওয়া যাবে না। দুর্নীতির বিষয় না থাকলেও, জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিজেপি যোগদান নিয়েও এমনই আপত্তি তুলেছিল বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।