পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তারপর থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র জমার প্রক্রিয়া। এই মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েই হিংসার ঘটনা ঘটছে বিভিন্ন জেলায়। তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। এই আবহে আজ, সোমবার আসানসোলের সালানপুরে অন্য ধরনের ছবি দেখা গেল। এবার মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসা বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের গোলাপ দিয়ে অভ্যর্থনা তৃণমূল কংগ্রেসের। এমনকী তার সঙ্গে বাড়তি সংযোজন ঠান্ডা পানীয় এবং চা। সেগুলি খাইয়ে তবে ছাড়া হচ্ছে।
এদিকে গোলাপ ফুল দিয়ে সৌজন্য যেমন দেখানো হচ্ছে তেমনি প্রচণ্ড গরমের মধ্যে মনোনয়ন দিতে এসে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা যাদের সঙ্গে তাদের হাত থেকে জলের বোতলও নিচ্ছেন বিজেপি–সিপিএম নেতৃত্ব। তৃণমূল কংগ্রেসের এমন ব্যবহারে তাঁরা ভীষণ খুশি। তাই তাঁদের বলতে হচ্ছে, নির্বাচনের ছবিটা এমনই হওয়া উচিত। সম্প্রতি মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে মারামারি, হামলা, বিক্ষোভ, অশান্তির অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধী দলগুলি। সেখানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বার্তা বারবার দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। সেখানে এমন দৃশ্য সকলকে অবাক করেছে।
ঠিক কী দৃশ্য দেখা যাচ্ছে? অন্যদিকে সালানপুর ব্লকে দেখা গেল সৌজন্যের দৃশ্য। মনোনয়ন কেন্দ্রের বাইরে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–কর্মীরা বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস প্রার্থীদের হাতে গোলাপ ফুল, পানীয় জলের বোতল দিয়ে সৌজন্য দেখাচ্ছেন। এমনকী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর বিডিও অফিসের ক্যান্টিন ডাকছেন। সেখানে চা খাইয়ে গল্প করে বিদায় জানাচ্ছেন। এমন দৃশ্য বাংলা আগে দেখেনি। এখানেই দৃশ্য শেষ হচ্ছে না। তাঁরা কেমন আছেন? কোনও অসুবিধা হয়নি তো? এসব জিজ্ঞাসা করছেন। বলছেন, কোনও সমস্যা হলে বলবেন। পাশে আছি।
কেন এমন কাজ করা হল? বিরোধী নেতাদের কয়েকজন এই দৃশ্য দেখে চমকে ওঠেন। তাঁরা জানান, এতটা সৌজন্য পাবো ভাবিনি। এই দৃশ্য দেখে সত্যিই অবাক হতে হচ্ছে। বাংলায় এমন দৃশ্য শেষ কবে দেখা গিয়েছিল বলা সম্ভব নয়। ভোটের দিনও এমন সৌজন্য পেলে আরও খুশি হতে পারবে সবাই। এই বিষয়টি নিয়ে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ–সভাপতি ভোলা সিং বলেন, ‘আমরা চাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। সবাই যেন ভাল করে মনোনয়ন জমা দিতে পারে। সেটা আমরা দেখছি। আমরা বিরোধীদের মনোনয়ন কেন্দ্রে ফুল, জল দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছি। উন্নয়নকে সামনে রেখে ভোট হবে সালানপুর ব্লকে। আমরা সারা বছর মানুষের সঙ্গে থাকি। তাই আমাদের এটাই করা উচিত। মানুষ জানেন উন্নয়ন কারা করেছে। কাকে ভোট দিতে হবে।’