লেখার ছত্রে ছত্রে হেঁয়ালি। আর তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের সেই হেঁয়ালি ঘিরেই রাজ্য রাজনীতিতে দলবদলের জল্পনা নতুন মাত্রা পেল।
একটি ফেসবুক পোস্টে দেবাংশু লেখেন, ‘১ বিধায়ক বলেছিলাম। হয়ে গেছে। নতুন আপডেট পাইপলাইনে আরো ২। আর ওই ৪ এখনও ৪–ই আছে। এক্ষেত্রে Delayed ≠ Denied! আর সঙ্গে একটা নতুন বটগাছও। #খেলা_হবে।’
সেই পোস্টের পরই জল্পনা উঠেছে, কাদের কথা বলতে চেয়েছেন দেবাংশু? ‘১ বিধায়ক'-এর রহস্যভেদ অবশ্য অনেকটাই হয়েছে। গত শুক্রবার (২৮ অগস্ট) তৃণমূলে ফিরেছিলেন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য। বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়ে বলেন, 'নিজের পুরনো দলে ফিরে ভালো লাগছে।' আর সেদিনই ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন।
কিন্তু জল্পনা সবথেকে বেশি ‘পাইপলাইনে আরো ২’ এবং ‘একটা নতুন বটগাছও’ নিয়ে।কোন ‘বটগাছ’ কীভাবে পড়বে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তাতেই যে দু'জনের নাম উঠে আসছেন, তাঁরা হলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও মুকুল রায়।
এমনিতেই জুলাইয়ের শেষের দিক ও অগস্টের শেষের দিকে মুকুলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে কম গুঞ্জন শোনা যায়নি। যদিও মুকুল নিজে জানিয়েছিলেন, তিনি বিজেপি ছাড়ছেন না। তা সত্ত্বেও অবশ্য গুঞ্জন খুব একটা কমেনি।
তারইমধ্যে শোভনকে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। গত বছর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন। দলের কর্মসূচিতে তাঁর দেখা মেলে না। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা চলছে। সেই জল্পনায় সম্প্রতি ঘি ঢেলেছে তৃণমূলের একটি পদক্ষেপ। কলকাতার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে রত্না চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেয় ঘাসফুল শিবির। তখনই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল, শোভনের ঘরে ফেরার পথ প্রশস্ত করতেই কি রত্নার উপর কোপ নামল? সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে অবশ্য শোভন স্পষ্ট করেছেন, তাঁর সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি। একইসঙ্গে জল্পনা জিইয়ে রেখে মন্তব্য করেন, তিনি বিজেপিকে এখনও পদত্যাগপত্র পাঠাননি।
যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশের পর্যবেক্ষণ, শোভন ও মুকুলকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জল্পনা চলছে। ফলে তাঁরা 'বটগাছ' হলেও ‘নতুন’ নয়। বড়জোর 'ওই ৪ এখনও ৪–ই আছে'- তালিকায় তাঁরা থাকতে পারেন। আর তাই যদি হয়, তাহলে ‘নতুন বটগাছ’-টি কে? তিনি দলের নেতা বা নেত্রী? তা নিয়েই যত জল্পনা।