শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লীর মাঠে শেষবার পৌষমেলা হয়েছিল ২০১৯ সালে। তারপর ৩ বছর বিভিন্ন কারণে এই মেলা বন্ধ থাকে। তিন বছর পর ফের সেখানে মেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে খুশি শান্তিনিকেতনবাসী। তবে তাতে আবার নতুন করে জট তৈরি হয়েছে। এই মেলায় আপত্তি জানিয়েছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। এই অবস্থায় এবারও সেখানে পৌষমেলা হবে কিনা তাই নিয়ে জট তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: শান্তিনিকেতনে পূর্বপল্লীর মাঠে ৩ বছর পর ফিরছে পৌষমেলা, বিশ্বভারতীতে সাজো সাজো রব
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেহেতু পরিবেশ আদালতের কিছু বিধি নিষেধ আছে সেই কথা মাথায় রেখে পূর্বপল্লীর মাঠে ছোট করে মেলার আয়োজন করা হবে। শুক্রবার দু'ঘণ্টা ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠক হয়েছে। সেখানে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগের মতো জাঁকজমকপূর্ণভাবে মেলা হবে না। আর তাতেই আপত্তি জানাচ্ছে ট্রাস্ট। তাদের বক্তব্য, মেলার জন্য সেখানে প্রচুর খরচ হয়। কিন্তু ছোট আকারে মেলা করলে সেই খরচ উঠবে না। তাছাড়া এখনও পর্যন্ত বিশ্বভারতীর তরফে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে কিছু জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার। তাঁর বক্তব্য, মেলা হওয়ার খবর পেয়ে যদি কোনও ব্যবসায়ী দোকানপাট নিয়ে আসেন এবং সেখানে ব্যবসা করতে চান তাহলে তাদের বারণ করা সম্ভব হবে না। এ অবস্থায় তিনি চাইছেন আগের মতোই বড় আকারে মেলা করতে হবে। আর সেখানেই জট দেখা দিয়েছে। কারণ এই মেলার আয়োজন করে থাকে বিশ্বভারতীর শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এবং তার তত্ত্বাবধানে থাকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে দুপক্ষের সম্মতি ছাড়া এই মেলা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় পূর্ব পল্লীর মাঠে আদৌও পৌষ মেলা হবে কিনা তাই নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক, সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে পূর্বপল্লীর মাঠে পৌষ মেলা হয়েছিল। তারপরে চলে আসে কোভিড পর্ব। সেই কারণে ২০২০ সালে সেখানে মেলা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে ২০২১ এবং ২২ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী পৌষমেলায় আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাঁর আপত্তিতে সেখানে পৌষমেলা সম্ভব হয়নি। তবে সম্প্রতি উপাচার্য হিসেবে বিদ্যুতের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আর তারপরেই পুরনো মাঠে পৌষমেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত হয় সেটাই দেখার।