ছাত্রীদের রাতে তাঁর সঙ্গে থাকার কুপ্রস্তাব দিতেন অধ্যাপক। এবার এই কুপ্রস্তাব দেওয়া অধ্যাপকের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিলেন পড়ুয়ারা। তারপর বিক্ষোভ দেখালেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। এই ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ আরবি বিভাগের অভিযুক্ত অতিথি অধ্যাপককে তাঁর ঘর থেকে বের করে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাঁকে অপসারণ করার দাবি তুলে শুরু হয় বিক্ষোভ। সোমবার এই ঘটনা ঘটলেও মঙ্গলবারও তার রেশ রয়েছে। ফলে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে।
এদিকে আরবি বিভাগের অতিথি অধ্যাপক আবদুল্লা মোল্লা। বিশ্বভারতীর ভাষা ভবনে পড়ানোর সুযোগ নিয়ে ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন তিনি বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, এই কুপ্রস্তাব আবদুল্লা বহুদিন ধরেই দিয়ে আসছেন। পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে বাড়তি নম্বর পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাত্রীদের ‘রাত্রিযাপন’ করার কুপ্রস্তাব তিনি হোয়াটসঅ্যাপ করতেন বলে অভিযোগ। গত ২৮ মার্চ এইসব অভিযোগ বিশ্বভারতীর ইন্টারনাল কমপ্লেন্ট কমিটিতে লিখিত আকারে দায়ের করেন তিনজন ছাত্রী। তাতেই মুখোশ খুলে যায় অধ্যাপক আবদুল্লার। এমনকী শান্তিনিকেতন থানাতেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনজন ছাত্রী। তাতে প্রকাশ্যে আসে আবদুল্লার কাহিনী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। তাই বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন: ‘অসীম সরকার ক্লাস ফোর পাশ’, বলছেন বিজেপিরই নেতা, রামকৃষ্ণের সঙ্গে তুলনা করলেন প্রার্থী নিজেই
অন্যদিকে আরবি বিভাগের ওই অতিথি অধ্যাপককে দেখতে পেয়ে পড়ুয়ারা তাঁকে তাঁর বসার ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। অধ্যাপককে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান ছাত্রীরা। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশন অভিযোগকারী ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিক্ষোভরত ছাত্রীরা বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি। তাই আমরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। ওই অধ্যাপককে না সরালে আমরা ক্লাস করব না। রাতেত আমাদের মানসিক নির্যাতন করে মেসেজ করত।’
এছাড়া এই ঘটনা নিয়ে এখন তেতে আছে পড়ুয়ারা। বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘অতিথি অধ্যাপক দ্বারা ছাত্রীদের হেনস্থার অভিযোগের তদন্ত হোক। তারপর শাস্তি দেওয়া হোক। তদন্ত চলার সময়ে অভিযুক্ত অধ্যাপককে বিশ্বভারতীতে প্রবেশ করতে দেওয়া যেন না হয়। প্রাক্তন উপাচার্য নিজে হেনস্থাকারী হওয়ার দরুণ সমস্ত যৌন হেনস্থায় মদত দিয়েছেন। সেই ধারা এখন বন্ধ হয়নি। বিশ্বভারতীর বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সৃষ্ট আইসিসি এখনও দায়িত্বে। তদন্তের স্বার্থে আমরা আইসিসি পুনর্গঠনের দাবি জানাচ্ছি।’