পঞ্চায়তে নির্বাচনে কোন দাদার 'তল্পিবাহক' হয়ে টিকিট মিলবে না। মানুষদের সার্টিফিকেট দেবেন তাঁরাই টিকিট পাবেন। কেশপুর সভা থেকে দলীয় কর্মীদের এমন বার্তাই দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয় করা টিকিট পাবেন তার উদাহরণ দিতে গিয়ে তিন জনকে মঞ্চে তুলে আনেন তিনি। যাঁরা নিজেদের বাড়ির খারাপ অবস্থা সত্ত্বেও আবাস যোজনার বাড়ি নেন নি।
এ দিন সভা থেকে অভিষেক বলেন , ‘কোন অঞ্চল সভাপতি কী করছে সব আমার নজরে আছে। কয়েকজন নেতার কাজে দলের মাথা নত হলে তা সহ্য করব না। তিনি আরও বলেন,'যারা ভেবেছে প্রার্থী হয়ে মানুষের কাজ করবেন না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। কোন দাদার তল্পিবাহক হয়ে টিকিট মিলবে না। মানুষ যাদের সার্টিফিকেট দেবেন তাদের টিকিট দেওয়া হবে।'
এ প্রসঙ্গে তিনি নিজের নম্বর দিয়ে বলেন, ‘আপনারা যদি মনে কেউ ভালো কাজ করছে, আমাকে ফোন করে জানান। দল তাঁদের থেকে প্রার্থী বেছে নেবে।’ তাঁর কথায়, ‘এটাই নতুন তৃণমূল।' মঞ্চে তিনি শেখ হসিনুদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে তুলে আনেন, যিনি তৃণমূল দল করেন না। তাঁর কাঁচা বাড়ির ছবি দেখিয়ে অভিষেক বলেন, ‘ ইনি নিজের বাড়ির খারাপ অবস্থা হওয়া সত্ত্বেও আবাস যোজনার বাড়ি নেন নি।’ অভিষেক ,তাঁর কাছে কারণ জানতে চান। উত্তরে হসিনুদ্দিন বলনে, আবাস যোজনায় যে টাকা তিনি পেতেন তাতে তাঁর প্রয়োজনীয় পাকা বাড়ি করা সম্ভব ছিল না। তার জন্য আরও তিন লাখ টাকা দিতে হতো। সেই টাকা দিলে তিনি মেয়ের বিয়ের দিতে পারতেন না। তাই তিনি আবাস যোজনার টাকা নেন নি।
এর পর তাঁর পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন। হাত তুলে ধরে অভিষেক বলেন, ‘ আগামী দিনে এ রকম মানুষরাই আমাদের পঞ্চায়েতের মুখ হতে চলেছে।’ হসিনুদ্দিনের মেয়ের বিয়ের দায়িত্ব নেন তিনি।
এরপর অভিষেক মঞ্চে ডেকে নেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মঞ্জু দলবেরা ও তাঁর স্বামী তৃণমূলের বুথ সভাপতি অভিজিত দলবেরাকে। তাঁরাও আবাস যোজনার বাড়ি নেন নি। তাঁদের কাছেও অভিষেক জানতে চান কেন নেননি। তার উত্তরে দু'জনে জানান ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার টাকা রাখতে গিয়ে তাঁরা বাড়ি নেননি। কারণ, আবাস যোজনার টাকা নিয়ে বাড়ি তৈরি করতে গেলে তাঁদের নিজেদেরও টাকা দিতে হতো। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলের তরফে তাঁদের বাড়ি করে দেওয়া হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁদেরই প্রার্থী করা হবে।