বিহারের ভোটের প্রভাব বাংলায় পড়ুক বা না পড়ুক, বাংলার প্রভাব যে বিহার নির্বাচনে পড়েছে তা এখন নির্দ্বিধায় বলা যায়। কারণ কলকাতার বেহালার বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী এবার বিহার বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন এবং জিতেও গিয়েছেন। আর তাতেই বিহার নির্বাচনে বাংলার প্রভাব পড়েছে বলা যায়।
লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডির হয়ে বিহারের একমা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে ছিলেন শ্রীকান্ত যাদব। দলীয় সূত্রে খবর, ১৩,৯৫০ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সীতা দেবীকে পরাজিত করেছেন। আর সেই আনন্দের রেশ এসে পড়েছে বাংলার মাটিতে। তাও আবার খাস কলকাতায়। তাই বিহারে বাংলার রেশ বলা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, সীতা দেবী ওই কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক। বিহারের পরিচিত বাহুবলী নেতা ধুমল সিংয়ের স্ত্রী। ধুমল নিজে নির্বাচনে না দাঁড়িয়ে স্ত্রীকে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিলেন এবার। ওই নেতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন খিদিরপুরের বন্দর এলাকার পরিবহন ব্যবসায়ী শ্রীকান্ত যাদব।
এই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তিনি জানান, বেহালায় বাড়ি তাঁর। তাঁর সঙ্গেই থাকেন স্ত্রী রুমা, পুত্র সঞ্জীব এবং রাজ। সঞ্জীব ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বর্তমানে বাবার পরিবহন ব্যবসা সামলাচ্ছেন। ছোটো ছেলে রাজ ভবানীপুর কলেজ থেকে সদ্য পাশ করে বেরিয়েছেন। শ্রীকান্ত জন্মেছিলেন বিহারের একমায়। সেখানে তাঁদের পৈতৃক বাড়ি রয়েছে। দু’বছর বয়সে তাঁর বাবার হাত ধরে কলকাতায় আসা। তাঁর বাবা কলকাতা বন্দরে কর্মরত ছিলেন।
আরজেডির পশ্চিমবঙ্গ শাখার রাজ্য সভাপতি বৃন্দা রাইয়ের হাত ধরে আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। সেই আলাপ ক্রমে গাঢ় হয়। তখন নিজের পৈতৃক এলাকা একমা থেকে ভোটে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন লালুজির কাছে। সেই আবেদন মঞ্জুর করে ২০২০ বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে টিকিট দেয় আরজেডি। তেজস্বী যাদব নিজে হাতে তাঁকে টিকিট দিয়েছিলেন। সেই ছবি যত্ন করে রাখা রয়েছে তাঁর কাছে। প্রার্থী হয়ে দলকে জিতিয়ে খুশি শ্রীকান্ত।
কলকাতার এক বাসিন্দার উপর আরজেডি’র এই যে অবদান এবং বিশ্বাস, তা মনে রেখে লালুপ্রসাদ যাদব এবং তেজস্বীকে কালীঘাটের মায়ের মূর্তির আদলে তৈরি কালী ঠাকুরের মূর্তি উপহার দেবেন বলে জানিয়েছেন শ্রীকান্ত।