বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে দু’বার হামলা হয়েছে। এবার তার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছে রেল। কিন্তু তার আগে এই ইস্যুতে রাজ্য সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে যেভাবে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন বিজেপি নেতারা সেটা এখন ব্যুমেরাং হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছেন স্বয়ং বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে হামলা নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে নালিশ ঠুকেছিলেন সুকান্ত–শুভেন্দু। কড়া টুইট করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। আর দিলীপ ঘোষ, সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করে মুখ্যমন্ত্রী নীরব কেন? প্রশ্ন তুলেছিলেন। আজ, বৃহস্পতিবার আবার তিনিই বলেন, ‘বিহার থেকে এমন ঘটনা ঘটেছে তা জানব কী করে?’ তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেছে, ‘এত রাজনীতির চেষ্টা সব মাঠে মারা গেল।’
এদিকে সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, বাংলা ভাল কিছু পাওয়ার যোগ্য নয়। এমনকী আরও দুটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পাওয়ার কথা ছিল। এই ঘটনার পর রেল কড়া পদক্ষেপ করতে পারে। সেখানে আজ, বৃহস্পতিবার পাথর ছোড়ার ঘটনায় প্রকাশ্যে নতুন তথ্য এনেছে খোদ রেল কর্তৃপক্ষ। পূর্বরেলের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘বন্দে ভারতে পাথর ছোড়ার বিষয়ে তাঁদের হাতে কিছু তথ্য এসেছে। ট্রেনে লাগানো সিসি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে, বন্দে ভারতে যখন পাথর ছোড়া হয়েছে তখন সেটি যাচ্ছিল বিহারের মধ্যে দিয়ে। এমনকী ট্রেনের পাশে বেশ কয়েক জনকে দাঁড়িয়েও থাকতে দেখা যায়।’ এই পরিস্থিতিতে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছেন মেদিনীপুরের সাংসদ। তাই দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘একদিন নয়, দু’দিন ঘটেছে এই ঘটনা। মালদায় ঘটেছে। হতে পারে জায়গা দুটো কাছাকাছি। কিন্তু বাংলায় তো এমন ঘটনা নতুন নয়, তাই বিজেপি বলেছে। আগে পুরুলিয়া এক্সপ্রেসেও ঢিল মারা হয়েছিল। সেটাকে তো আর বাংলার বাইরে বলা যায় না।’
অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনায় এনআইএ তদন্ত দাবি করেছিলেন। সুকান্ত মজুমদার সিবিআই তদন্ত চেয়েছিলেন। এখন তাঁরা উত্তর খুঁজছেন। আর দিলীপ ঘোষ সাফাই দিয়ে বলেন, ‘গোটা পশ্চিমবঙ্গেই এমন ঘটনা ঘটে চলেছে। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভের সময় তো রেলের ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল বাংলাতেই।’ পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের ইনটার্জ বলেন, ‘পূর্ব রেলের অধিকর্তা স্বীকার করে নিলেন বন্দে ভারতে পাথর ছোড়ার ঘটনা বাংলার নয় বিহারের। বিজেপি নেতাদের মিথ্যাচার, বাংলার মুখে কালি লাগানো এবং সাম্প্রদায়িত রাজনীতির মরিয়া চেষ্টা মাঠে মারা গেল।’
আর কী বলছে তৃণমূল কংগ্রেস? এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘বিজেপি নেতাদের বাংলা এবং বাঙালি বিদ্বেষ একমাত্র লক্ষ্য। বাংলাকে বদনাম করা, বাংলার অপমান করা তাঁদের একমাত্র কাজ। বন্দে ভারত চলার দু’মাসের মধ্যে বিহার এবং উত্তরপ্রদেশে আক্রমণ হয়েছিল বন্দে ভারতের উপর। উত্তরপ্রদেশে কাদের শাসন চলে আমরা জানি। তার পরও এরা নির্লজ্জের মতো বাংলা থেকে নির্বাচিত হয়ে বাংলার মানুষের ভোট পেয়ে বাংলার বিরুদ্ধাচরণ করে। আগামী নির্বাচনে এসবের জবাব দেবে মানুষ।’