২০১৪ সালে নদিয়ার নাকাশিপাড়ার জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের প্রয়াত সংসদ তাপস পাল মন্তব্য করেছিলেন, ‘ঘরে ঢুকিয়ে রেপ করে দেব।’ এত বছর কেটে যাওয়ার পরেও সেই মন্তব্যের রেশ যেন কাটেনি। তাপস পালের সেই মন্তব্যের প্রসঙ্গ উঠল কলকাতা হাইকোর্টে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর একটি মামলায় এই প্রসঙ্গ উঠে আসে। বিশ্বভারতী প্রাক্তন উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্গাপুজো নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই সংক্রান্ত মামলায় পুলিশি পদক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলে ধরতে গিয়েই তাপস পালের প্রসঙ্গ টেনে আনেন আইনজীবী।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে রক্ষাকবচ দিল হাইকোর্ট, জেরা করলেও কড়া পদক্ষেপ নয়
এদিন মামলার সওয়াল জবাবের সময় বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আইনজীবী তাপস পালের প্রসঙ্গ তোলেন। বিদ্যুৎ চক্রবর্তী দুর্গাপুজো নিয়ে যে মন্তব্য করেছিলেন তা তেমন কিছুই বিতর্কিত ছিল না বলেই দাবি করতে গিয়ে তিনি তাপস পালের প্রসঙ্গ টানেন। আইনজীবী জানান, তিনি তাপস পালের ওই বিতর্কিত মন্তব্যের মামলায় তাঁর আইনজীবী ছিলেন। কিন্তু, সেই ঘটনায় পুলিশ এফআইআর করেনি অথচ বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এমন কিছু মন্তব্য করেনি যে তাতে এফআইআর করতে হবে। আইনজীবী বলেন, বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। সেখানে পুজোর ইতিহাস ব্যাখ্যা করেছেন বিদ্যুৎ। এটা কীভাবে বিরূপ মন্তব্য হতে পারে? তাই নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। যদিও বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আগের ক্ষেত্রে ভুল হয়েছিল তার মানে এই নয় যে সেই ভুল চলতেই থাকবে।
উল্লেখ্য, বিদ্যুতের বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে যেমন বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে তেমনি টোটো চালককে বাধা দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। মাসখানেক আগে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর উপাচার্যের পদ থেকে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তাকে একাধিক মামলায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। তার মধ্যে একটি হল দুর্গাপুজো নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ।
তবে এই সংক্রান্ত মামলায় স্বস্তি পেয়েছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। আগামী ১১ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, আপাতত বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না।
প্রসঙ্গত, প্রয়াত অভিনেতা তাপস পাল তৃণমূলের দুবালের সাংসদ ছিলেন। তিনি ছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। নাকাশিপাড়ায় ২০১৪ সালে একটি জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই জনসভাতেই তাপস পালের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল। তারপরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। ঘটনায় প্রথমে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করলেও পরে কলকাতা হাইকোর্ট সেই মামলায় তাপসের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছিল।