কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় জঞ্জালের স্তর থেকে বর্জ্য পরিষ্কার করার কাজ করে থাকেন সাফাই সাথীরা। তাঁদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে চায় কলকাতা হাইকোর্ট। এ বিষয়ে রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হোটেল, রেস্তরাঁ থাকা এলাকাগুলিতে রাতে সাফাই অভিযান চালাবে পুরসভা
প্রসঙ্গত, শহরের বর্জ্য পরিষ্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সাফাই সাথীরা। স্তূপ থেকে বর্জ্য তোলার পাশাপাশি নর্দমা থেকে বর্জ্য পরিষ্কার করে থাকেন তাঁরা। তাছাড়া ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকেও তাঁরা বর্জ্য সংগ্রহ করে থাকেন। এই সাফাই সাথীরা বিষাক্ত বর্জ্য পরিষ্কার করার ফলে ক্ষতিকর গ্যাসের প্রভাব পরে তাঁদের শরীরে। যার ফলে তাঁদের শরীরে বাসা বাঁধছে বিভিন্ন ধরনের রোগ। শুধু তাই নয়, অস্বাস্থ্য পরিবেশে কাজ করে কর্মীদের শিশুরাও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় তাদের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলেই মনে করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। তাই তাঁদের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে রাজ্য নিয়ন্ত্রণ পরিষদকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
সোমবার এই মামলার শুনানি হয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে ডাম্পিং গ্রাউন্ডগুলিতে গিয়ে এই বিষয়ে প্রকৃতির তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। তার ভিত্তিতে আদালতে রিপোর্ট জমা দেবে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মোল্লারভেড়ি, বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে ও ধাপা সংলগ্ন ডাম্পিং গ্রাউন্ডের দূষণ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে এর আগে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে আদালত ব্যবস্থা নিতে বলেছিল। কিন্তু তা কার্যকর না হয় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সেই সংক্রান্ত মামলায় সাফাই সাথীদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সুভাষ দত্ত। প্রসঙ্গত, ধাপা ড্যাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে পরিবেশ দূষণ রোধে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে জ্বালানি অর্থাৎ বায়ো গ্যাস তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করেছে কলকাতা পুরসভা। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই বর্জ্য বায়ো গ্যাস উৎপাদনের প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিল কলকাতা পুরসভা। তবে ধাপার বর্জ্য পরিষ্কার এবং প্রক্রিয়াকরণের কাজ শুরু হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। লক্ষ্য, ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে ধাপার সমস্ত বর্জ্য সরিয়ে ফেলা।