শেখ শাহজাহানকে নিয়ে এবার শুরু হয়ে গেল সিবিআই-সিআইডি দড়িটানাটানি। মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্য়ে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে শাহজাহানকে। সেই মতো সিআইডির দফতরে চলে গিয়েছিলেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রচুর জওয়ানও চলে গিয়েছিলেন ভবানী ভবনে। এরপর দীর্ঘ অপেক্ষা। ঘণ্টা দুয়েক ধরে ভেতরে চলে আলোচনা। কিন্তু সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দেখা গেল একের পর এক গাড়ি বেরিয়ে আসছে ভবানী ভবন থেকে। সেখানে দেখা গেল কোনও গাড়িতেই নেই শাহজাহান। কোথায় গেল শেখ শাহজাহান?
পরে জানা যায় শেখ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয়নি সিআইডি। কিন্তু কারণটা কী? সূত্রের খবর, হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার। তারপরই এদিন আর হস্তান্তর করা হয়নি। এমনকী দ্রুত শুনানি চেয়েও আবেদন করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। সম্ভবত সেই মামলার শুনানি হতে পারে বুধবার। আর সেই শুনানি না হওয়া পর্যন্ত এখনই হস্তান্তর করা হবে না শেখ শাহজাহানকে। অবশেষে খালি হাতে ফিরতে হল সিবিআইকে। একের পর এক গাড়ি বেরিয়ে গেল। কিন্তু সেই গাড়িতে নেই শেখ শাহজাহান।
সেক্ষেত্রে এবার কবে শেখ শাহজাহানকে সিবিআই তাদের হেফাজতে পায় সেটাই এখন দেখার। আপাতত সিআইডি হেফাজতেই রয়েছে সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহান। তাকে নিজের হেফাজতে নেওয়ার জন্য় সবরকম চেষ্টা করছে সিবিআই। কিন্তু সেটা এদিন সম্ভব হয়নি।
মিনাখাঁ থেকে তাকে রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তারপর সিআইডির হাতে তুলে দেয় তদন্তের স্বার্থে। আপাতত সিআইডির হেফাজতে রয়েছেন শাহজাহান। শেখ শাহজাহান সিবিআইয়ের হেফাজতে যাবে এটা ভেবে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছিল সন্দেশখালি। তবে এদিন অবশ্য সেই রায় অনুসারে সিবিআই পেল না শেখ শাহজাহানকে।
ইডির উপর হামলার ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল শাহজাহানের। শুধু হামলার অভিযোগ নয়, রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত ৬টি মামলা রয়েছে সিআইডির হাতে। সেক্ষেত্রে অনেকের মতে, এখন শেখ শাহজাহানের একটাই চেষ্টা ইডি বা সিবিআইয়ের হাতে তাকে যাতে যেতে না হয়। এনিয়ে আবেদনও জানিয়েছেন তার আইনজীবী। কিন্তু ইডির হাতে যেতে কেন এত আপত্তি শাহজাহানের?
তবে সূত্রের খবর, পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে তাদের হেফাজতে থাকার সময়তেও দাপট কোনও অংশে কমেনি শাহজাহানের। সূত্রের খবর, এককথা বার বার তিনি বলতে রাজি নন বলেও জানিয়েছেন। এমনকী তদন্তে কতটা সহযোগিতা করছেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সব মিলিয়ে শেখ শাহজাহান বন্দি হওয়ার পরেও আতঙ্ক পুরোপুরি কাটছে না সন্দেশখালির। কারণ অনেকেরই ধারনা যে নেতা ধরা পড়ার পরেও এত দাপট দেখাচ্ছেন, শরীরী ভাষায় বুঝিয়ে দিচ্ছেন তিনি কতটা প্রভাবশালী সেক্ষেত্রে তিনি বেরিয়ে এলে কী হতে পারে সেটা ভাবতেই কেঁপে উঠছে অনেকের বুক।