শিয়ালদা স্টেশন এবং সংলগ্ন এলাকায় কোনও অপরাধ ঘটলে অপরাধীকে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। কলকাতা পুলিশের চার থানায় সিসি ক্যামেরা বিকল তা আগেই প্রকাশ্যে এসেছে। এবার শিয়ালদা স্টেশনের একাধিক প্ল্যাটফর্মেও সিসি ক্যামেরা বিকল হয়ে পড়ে আছে বলে প্রকাশ্যে এসেছে। তার জেরে চুরি–ছিনতাই বা হাত সাফাইয়ের মতো অপরাধের তদন্ত থমছে যাচ্ছে। বিপাকে পড়ছে শিয়ালদা জিআরপি। দেশের অন্যতম ব্যস্ত শিয়ালদা স্টেশনের সিসি ক্যামেরা খারাপেও কারও কোনও হেলদোল নেই। যদিও এই বিষয়ে এসআরপি শিয়ালদা মুখে কুলুপ এঁটেছে।
ঠিক কী ঘটেছে শিয়ালদায়? দৃশ্য এক, ১ ডিসেম্বর সকাল। ভাস্কর পাল ঢাকুরিয়া স্টেশন থেকে শিয়ালদা যাচ্ছিলেন। শিয়ালদা স্টেশনে নেমে আর একটি ট্রেন ধরে কল্যাণী যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তখন তিনি অনুভব করলেন পকেটে মানিব্যাগ নেই। ওই মানিব্যাগে প্রায় হাজার টাকা ছিল বলে দাবি। এভাবেই বিপদে পড়তে হয়েছিল ভাস্করবাবুকে। দৃশ্য দুই, আকড়া স্টেশন থেকে বেলঘরিয়া যাচ্ছিলেন দেবদীপ চক্রবর্তী। শিয়ালদা স্টেশন পার করার পর তিনি দেখেন, তাঁর কাঁধে ঝোলানো ব্যাগটি কাটা। সেখানে থাকা মানিব্যাগ নেই। এমনকী স্মার্টফোনটিও খোয়া গিয়েছে। এইসব ঘটনা শিয়ালদা রেল পুলিশকে জানানো হয়। কিন্তু দেখা যায়, দূরের দু’টি ক্যামেরায় (১০৬ ও ১০৭ নম্বর) অস্পষ্ট ছবি ধরা পড়েছে। অর্থাৎ ক্যামেরা দুটি বিকল হয়ে পড়েছে।
তারপর সেখানে কী ঘটল? রেল পুলিশ সূত্রে খবর, নানা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেও ক্যামেরার ফুটেজ মেলেনি। ফলে তদন্ত থমকে গিয়েছে। এখনও চুরির ঘটনার কিনারা করতে পারেনি জিআরপি। এদিকে আগেই জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশের আমহার্স্ট স্ট্রিট, সিঁথি, কাশীপুর, টালা—চারটি গুরুত্বপূর্ণ থানার লক-আপ, সেরেস্তা, থানার প্রবেশ পথের ক্যামেরাগুলি খারাপ। এই পরিস্থিতিতে কেমন করে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব? প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন অনুযায়ী, দেশের সব থানায় সিসি ক্যামেরা লাগানো বাধ্যতামূলক। যদিও রেল স্টেশনের ক্ষেত্রে এমন কোনও নির্দেশিকা নেই। এই পরিস্থিতিতে একদিকে চারটি থানায় সিসি ক্যামেরা খারাপ, অন্যদিকে শিয়ালদা স্টেশনেও একাধিক সিসি ক্যামেরা খারাপ। আর কোনও স্টেশনে এমন অবস্থা হয়ে আছে কিনা তা জানা যায়নি। ঘটনা ঘটলে সেসব প্রকাশ্যে আসবে।