মানুষের হাতে টাকা নেই। রোজগার কমছে। দেশে দুটো বছর করোনাভাইরাসের জন্য রোজগার তলানিতে ঠেকেছে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গরীব মানুষের সম্মানের সঙ্গে রেল পরিষেবা পেতে চালু করেছিলেন ‘ইজ্জত মান্থলি’। এখন তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এখনও চালু হয়নি ‘ইজ্জত পাস’। দরিদ্র নিত্যযাত্রীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে রেলের কাউন্টার থেকে। তাই রেলে যাতায়াত করতে তাঁদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি কড়ি। এই গরীব নিত্যযাত্রীদের জন্যই রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ‘ইজ্জত মান্থলি’ চালু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেলমন্ত্রক সূত্রে খবর, এটা চালু না হওয়ার আশঙ্কাই প্রবল।
কাদের জন্য ছিল ‘ইজ্জত মান্থলি’? রেল সূত্রে খবর, গত দু’বছর ধরে বন্ধ রেলের ইজ্জত মান্থলি সিজন টিকিট। মাসে সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ের অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক–কর্মচারীদের জন্যই চালু হয়েছিল ‘ইজ্জত পাস’। সেখানে মোদী সরকারের ভূমিকায় প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। ট্রেনের টিকিটে আর অন্যান্য কনসেশনের মতোই ‘ইজ্জত পাস’ আপাতত চালু হচ্ছে না।
কেন এমন আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে? সম্প্রতি ‘ইজ্জত পাস’ নিয়ে লোকসভায় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব একটি লিখিত জবাব দিয়েছেন। বিজেপি সাংসদ মঙ্গলা সুরেশ অঙ্গারি (প্রয়াত রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী সুরেশ অঙ্গারির স্ত্রী) জানতে চেয়েছিলেন, যাত্রীবাহী ট্রেনে গরীব মানুষের জন্য যে ‘ইজ্জত পাসে’র সুবিধে এখনও দেওয়া হচ্ছে কি না। জবাবে রেলমন্ত্রী জানিয়ে দেন, ‘সংশ্লিষ্ট পরিষেবা এই মুহূর্তে দেওয়া হচ্ছে না। কোভিডের কারণে রেলের রাজস্ব আদায় খুব কমেছে। ২০১৯–২০ সালের তুলনায় ২০২০–২১ অর্থবর্ষে রেলের আয় অনেক কমে গিয়েছে। তাই রেলের বোঝা আরও বাড়বে। এই কারণে ইজ্জত পাস পরিষেবা–সহ ট্রেনের টিকিটে অন্য কনসেশনের ব্যবস্থা করা এই মুহূর্তে সম্ভব হবে না।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেক প্রকল্পেই কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ বরাদ্দ করেনি। তা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে জোর শোরগোল রয়েছে। এবার ইজ্জত মান্থলি সেখানে যুক্ত হওয়ায় দেশের গরীব মানুষরা আরও বিপদে পড়লেন। কারণ রেল বোর্ডের এক সূত্রে খবর, এই ‘ইজ্জত পাস’ চালু হচ্ছে না। পরে পরিস্থিতি বদলালে তা ভেবে দেখা যেতে পারে।