কোভিডের নতুন চরিত্র নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে বর্ষশেষের উৎসব নিয়ে রাজ্যকে সতর্ক করে দিল কেন্দ্র। এমনকী মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে প্রয়োজনে নৈশ কার্ফু জারির পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। নেপথ্যে করোনার নতুন প্রজাতি। যা বাংলাতেও ধরা পড়েছে।
রাজ্য সরকার অবশ্য নৈশ কার্ফুর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে প্রত্যেক নাগরিককে সংযত ও সতর্ক থাকার আবেদন জানিয়েছে। রীতিমতো খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং দূরত্ববিধি মেনে চলার বার্তা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, কোভিডের সুরক্ষা বিধি লঙ্ঘন করে উৎসব করা যাবে না।
কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, দেশে সংক্রমণের হার কমলেও ইউরোপ ও আমেরিকায় নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। ইংল্যান্ডে নতুন জাতের করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাই গোটা দেশের জন্য নির্দিষ্ট আদর্শ আচরণবিধি তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রের আশঙ্কা, বর্ষশেষ ও বর্ষবরণের উৎসবে মাতবেন বহু মানুষ। তাই ‘সুপার–স্প্রেডার’ জমায়েতের উপরে কড়া নজর রাখতে হবে রাজ্যগুলিকে। প্রয়োজনে নৈশ কার্ফু জারির বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করুক রাজ্যগুলি।
এই বিষয়ে বৈঠক করেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। বৈঠক শেষে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নৈশ কার্ফুর মতো কঠোর ব্যবস্থার প্রয়োজন আমাদের রাজ্যে নেই। বরং পরিস্থিতি অনুযায়ী রাজ্যকে এইসব বিবেচনা করতে বলেছে কেন্দ্র। পুলিশ, প্রশাসন ও নাগরিক সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে শান্তভাবে এবং সুরক্ষাবিধি মেনে উৎসব উদ্যাপন করলে সমস্যা হবে না।’
এখন প্রশ্ন কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসবে মেতে উঠবে মানুষ? মুখ্যসচিব বলেন, ‘করোনার নতুন চরিত্র প্রকাশ্যে আসার পরে একটা উদ্বেগ রয়েছে দেশের সর্বত্র। তাই অকারণ উল্লাস পরিহার করাই ভাল। সরকার সকলকে আবেদন জানাচ্ছে, শান্ত, সংযত, নিরাপদভাবে বর্ষবরণের উৎসব করতে। পুলিশ সতর্ক থাকবে। পার্ক স্ট্রিট, ইকো পার্ক, ভিক্টোরিয়ার মতো জায়গায় যেখানে বেশি ভিড় হয়, সেখানে পুলিশের বুথগুলিকে সহায়তা কেন্দ্রে পরিণত করা হবে। মাস্ক বাধ্যতামূলক। কেউ মাস্ক না পরলে ওই সহায়তা কেন্দ্র থেকে তা দেওয়া হবে। প্রত্যেককে সতর্ক থাকতে হবে। সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। বিপদ থেকে দূরে থাকুন।’
উল্লেখ্য, গোটা দেশে নতুন প্রজাতির করোনার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০। তা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আগের থেকে এই ভাইরাস আরও শক্তিশালী বলে মনে করা হচ্ছে। তাই সতর্কতা তুঙ্গে উঠেছে। এখন দেখার বিষয় হল, মানুষের সচেতনতা বর্ষবরণকে আলোকিত করে নাকি উল্লাসে মেতে ভাইরাসকে আমন্ত্রণ করেন।