বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > কলকাতা > এখনও বিশ্বাস করি সরকার কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে না, CIDকে ভর্ৎসনা আদালতের

এখনও বিশ্বাস করি সরকার কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে না, CIDকে ভর্ৎসনা আদালতের

বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।

ভুয়ো নথি দিয়ে চাকরি মামলায় আদালতের চরম ভর্ৎসনার মুখে CID. তদন্তে অগ্রগতিতে চরম অসন্তোষ প্রকাশ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। তদন্তকারী দলের প্রত্যেক সদস্যের নাম ও পদমর্যাদাসহ হলফনামা পেশের নির্দেশ। 

ভুয়ো নথি দিয়ে স্কুল শিক্ষকের চাকরি মামলায় বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়ল সিআইডি। এদিন আদালতে ডিআইজি সিআইডি-সহ এই মামলার অন্যান্য তদন্তকারী আধিকারিকদের হাজিরা দিতে বলেছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। ডিআইজি সিআইডি হাজরা না দিলেও আদালতে হাজির ছিলেন প্রধান তদন্তকারী আধিকারিকসহ তদন্তকারী দলের ৪ জন। তাঁদের উদ্দেশে বিচারপতি বসু বলেন, আমি এখনও বিশ্বাস করি, কাউকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে না।

এদিন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কেন মুর্শিদাবাদের বাবা - ছেলের বাইরে তদন্ত বেরোচ্ছে না। তখন প্রধান তদন্তকারী আধিকারিক অসীম মণ্ডল বলেন, আমি SSC-র থেকে নথি নিয়ে বাকিদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করব। এতে আরও ক্রুদ্ধ হন বিচারপতি বসু। বলেন, আপনি কি আশা করেন, আপনাকে কেউ নথিগুলো পৌঁছে দিয়ে আসবে? এদিন আদালতে বিচারপতি বলেন, আমি এখনো বিশ্বাস করি সরকার কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করছে না। আপনারা যদি অন্য কিছু প্রমাণ করার চেষ্টা করেন তাহলে আমাকেও অন্য কিছু ভাবতে হবে।

এদিন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কেন বুধবারের শুনানিতে সিআইডির তরফে কোনও আধিকারিক হাজির ছিলেন না। এটা তাদের অকর্মণ্যতার উদাহরণ। আগামী ১৭ অগাস্টের মধ্যে সিআইডির তদন্তকারী দলের সমস্ত সদস্যের নাম ও পদমর্যাদা জানিয়ে আদালতে হলফনামা পেশ করতে হবে। এই মামলায় দ্রুত আরও গ্রেফতারি দরকার। তদন্তকারীরা উপযুক্ত পদক্ষেপ করুন। একজন প্রাক্তন DI আর কয়েকজন কর্মীকে গ্রেফতার করে আপনাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।

এই মামলায় সিআইডির ভূমিকায় অসন্তুষ্ট হয়ে বুধবারই তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিচারপতি বসু। বৃহস্পতিবার মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে বলেন, এই মামলায় সিবিআইকে যুক্ত করা হোক। জানতে চাওয়া হোক তারা তদন্তভার নিতে রাজি কি না।

মুর্শিদাবাদের গোথা হাই স্কুলে ভুয়ো নথি দিয়ে চাকরি করার অভিযোগ ওঠে অনিমেশ তিওয়ারি নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। তাঁর বাবা অসীম তিওয়ারি ওই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক। মামলাকারীর দাবি, ওই পদ তাঁর প্রাপ্য ছিল। সেই মামলার তদন্তভার সিআইডিকে দিয়েছিল আদালত। ইতিমধ্যে অসীম ও অনিমেশকে গ্রেফতার করেছে CID. মামলায় রাজ্যের সমস্ত জেলার DI-দের হলফনামা দিতে বলে আদালত। সেই হলফনামায় দেখা যায় গোটা রাজ্যে নথি জাল করে চাকরি পাওয়া এরকম ৩৬ জন শিক্ষক রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৮ জন ভুয়ো নথি দিয়ে চাকরি করছেন, ১১ জনের নথি পাওয়াই যায়নি, আর ৭ জন মেধাতালিকায় স্থান পরিবর্তন করে চাকরি পেয়েছেন। এদিন বিচারপতি বলেন, হলফনামায় স্পষ্ট যে এই দুর্নীতি কারও মস্তিষ্কপ্রসূত।

 

বন্ধ করুন