তৃণমূলের অন্দরমহলে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের আদি-নব্য দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়েছে। সেই আবহে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলের সেনাপতি তথা সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরত্ব নিয়ে জোর চর্চা চলছে বাংলার রাজনীতিতে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারা বিভিন্ন রকমের জল্পনা শুরু করেছেন। কেউ বলছেন, তিনি দলের বিধায়কদের ভাঙিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবেন। আর তারপরই নবান্ন দখল করবেন। আবার কেউ বলছেন বিজেপির সমর্থনে তিনি সরকার গড়বেন। এরকম বিভিন্ন মহলে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের জল্পনা রয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই সমস্ত জল্পনা নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: মমতার আস্থার সুযোগ নিয়ে…, পার্থকে নিয়ে বললেন অভিষেক, বালুর বিষয়ে থাকলেন নরম
আনন্দবাজারের সাক্ষাৎকারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানালেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে চান না। মুখ্যমন্ত্রীর পদের প্রতি তাঁর কোনও মোহ নেই। তিনি দলের কাজেই নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চান। প্রশাসনে থাকতে চান না। এমনকী ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে তিনি কোনও মন্ত্রী হতে চান না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দলের সৈনিক বলে নিজেকে দাবি করে থাকেন। তিনি বরাবরই দাবি করে থাকেন, ‘দলের একজনই নেত্রী। তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই তিনি কাজ করবেন। অন্য কারও নির্দেশে তিনি কাজ করবেন না।’ এবারও তেমনটাই বলতে শোনা যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনে থাকার আমার কোনও ইচ্ছা নেই। আমি দলের কাজেই নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চাই।’ ফলে তাঁকে এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে যে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে? তা একেবারে মূল্যহীন বলেই তিনি দাবি করেছেন। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, এই কথা তাঁর কানে আসেনি। তবে যাঁরা এই ধরনের কথাবার্তা রটাচ্ছেন, তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।
প্রসঙ্গত, বিরোধীদের জল্পনা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘একনাথ শিন্ডে’ বা ‘অজিত পাওয়ার’–এর মতোই ক্ষমতা দখল করতে পারেন। মহারাষ্ট্রে শিবসেনার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বালাসাহেব ঠাকরে। পরে তাঁর ঘনিষ্ঠ একনাথ শিন্ডে বালাসাহেবের পুত্র উদ্ধবের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শিবসেনার নামটি ছিনিয়ে নেন। মহারাষ্ট্রে বিজেপির সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। একইভাবে মহারাষ্ট্রে অজিত পাওয়ার শরদ গোবিন্দ পওয়ারের কাছ থেকে এনসিপির নাম ও ‘ঘড়ি’ ছিনিয়ে নিয়েছেন। তেমনটাই অভিষেককে নিয়ে জল্পনা বিরোধীদের। তবে অভিষেকের স্পষ্ট বার্তা মমতার নির্দেশেই দল এগোবে।