বারবার নিজেদের অক্ষমতার পরিচয় দিয়েই চলেছে বিধাননগর পুলিশ। এইবার সেই অক্ষমতার আর এক নমুনা দেখা দিল ডুরান্ড কাপ ডার্বির দিন, রবিবার সল্টলেক যুবভারতী ক্রিড়াগনে। সমর্থক থেকে শুরু করে সাংবাদিক সবাইকেই হেনস্থা করা হল সমান হারে। গায়ে তোলা হল বরিষ্ঠ সাংবাদিকদের। টেনে ধরা হল জামার কলার এবং সাংবাদিকদের ডুরান্ড কমিটির দেওয়া পরিচয় পত্র।
গত কয়েক বছর ধরেই ভারতীয় আর্মির এই ঐতিহ্যশালী টুর্নামেন্টকে রাজধানী দিল্লি থেকে তুলে এনে কলকাতায় আয়োজন করা হচ্ছে। আর সেই টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল চিরপ্রতিদন্ধী মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল। ফলে শহরে উত্তেজনা ছিল কার্যত তুঙ্গে। তাই ফাইনালের আয়োজনে কোনওরকম কমতি রাখতে চায়নি ভারতীয় সেনাবাহিনী। কিন্তু শতচেষ্টা করেও সমালোচনা থামানো গেল কি? শুক্রবার থেকেই টিকিট বিক্রি নিয়ে অব্যবস্থা যদি প্রধান কারন হয় তাহলে রবিবার ততধিক দায়িত্ব নিয়ে মুখ পোড়াল বিধাননগর পুলিশবাহিনী। তারা বারবার প্রমান করে দিল কতটা প্রশিক্ষনহীন এবং চাপের মুখে অক্ষম এই বাহিনী।
আরও পড়ুনঃ EB vs MB: নিয়মটা উনি আগে পড়ে দেখুন- কুয়াদ্রাতকে সপাটে জবাব ফেরান্দোর
রবিবার ডার্বি নিয়ে অতিরিক্ত সতর্কতা আগে থেকেই জারি ছিল। কিন্তু ঘটনা স্থলে পৌঁছে দেখা গেল সেসব গুড়ে বালি। ডুরান্ড কমিটির অফিসিয়াল পার্কিং স্থলে চলছে দেদার অবৈধ পার্কিং। সাংবাদিকদের গাড়িকে একপ্রকার জোর করে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে সাদা পোশাকধারী পুলিশ। প্রশ্ন করলে তারা জানায় ডুরান্ডের অফিসিয়াল পার্কিং নিয়ে তারা অবগতই নয়। অথচ সামনে জ্বলজ্বল করছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এবং ডুরান্ড কমিটির পার্কিং ব্যানার।
অন্যদিকে মাঠে ঢুকতে গিয়েই একাধিকজনকে সম্মুখীন হতে হয় আর এক সমস্যার মাঝে। অর্ধেক পুলিশ জানেনেই না ডুরান্ড কমিটির থেকে সাংবাদিকদের ধার্য করা পরিচয়পত্র কেমন দেখতে। এই কার্ড চেনেন না নলে বুকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়, শুধু তাই নয় টেনে ধরা হয় কলার। ৫ নম্বর গেটে এক বরিষ্ঠ সাংবাদিক হাতে ছাতা নিয়ে ঢুকছিলেন তাঁকে যথারীতি হেনাস্থা করা হয়, খিমছে দেওয়া হয় হাতের কাঁধে। প্রতিবাদ করলে গ্রেফতার করার হুমকি দেওয়া হয়। নেপথ্যে সেই সাদা পোশাকধারী বিধাননগর পুলিশ। শেষমেশ আর্মির মধ্যস্থতায় ঝামেলা মেটে। এই ঘটনা প্রমান করে দেয় এইরকম বড় টুর্নামেন্টের আগে কোনওরকম প্রশিক্ষন বা নোটিশই দেওয়া হয়না পুলিশদের।
আরও পড়ুনঃ EB vs MB: কেন গোলের পর ছুটে গিয়েছিলেন গ্যালারির দিকে, আবেগের বোমা ফাটিয়ে উত্তর দিমির
অন্যদিকে, টিকিটের হাহাকারের মাঝে স্টেডিয়াম চত্তরে দেদার কালোবাজারি দেখা দিল। তা নিয়ে যদিও কার্যত মাথাব্যাথা নেই আইনিরক্ষকদের। তারা তখন হায়াত হোটেলের মুখে কিছু গরিব ট্রাক চালকের চালান কাটাতে ব্যাস্ত। একজন পুলিশকর্মী তো বলেই দিলেন টিকেটের কালোবাজারি খেলারই অঙ্গ।
এদিকে হাওড়া-ব্যান্ডেল ট্রেনের সমস্যায় অনেক সমর্থক মাঠ অবধি পৌছাতেই পারলেন না। মাঠে পৌঁছেও শান্তি পেলেন কই তারা। ৫ বছরের এক শিশুর কোলে প্রিয় দলের খেলা দেখতে এসেছিলেন এক বছর তিরিশের ভদ্রলোক। তাঁকে শিশুর দুধের বোতল ফেলতে বাধ্য করে সাদা পোশাকধারীরা। কেড়ে নেওয়া হয় হাঁপানি রুগীর ইনহেলার।
এই পুলিশি ব্যবহারে মাথা হেট ডুরান্ড কমিটি সহ ভারতীয় সেনাবাহিনীর।