একচ্ছত্র ক্ষমতা ব্যবহার করে নিজের বাড়ির কাজের লোক থেকে সবজি বিক্রেতাকে দিয়ে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে গরুপাচারের টাকা লুকিয়ে রেখেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। বৃহস্পতিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে পেশ করা সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিটে এমনই জানিয়েছে ইডি। তবে নিজে নয়, অনুব্রতর নির্দেশে এই কাজ করেছেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষী সায়গল হোসেন। জেরায় অভিযুক্তরা একথা জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।
চার্জশিটে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গরুপাচারের বিপুল টাকা লুকিয়ে রাখতে ঘনিষ্ঠদের ব্যবহার করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তাদের দিয়ে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলিয়েছিলেন তিনি। অনুব্রতর নির্দেশে তাঁর বাড়ির পরিচারক বিদ্যুৎবরণ গায়েন, তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলান সায়গল। সেই সমস্ত অ্যাকাউন্টে প্রচুর নগদ জমা পড়তে থাকে। এছাড়া তৃণমূল কাউন্সিলর ওমর শেখ, তৃণমূল কর্মী অর্ক দত্ত, তাপস মণ্ডল ও শ্যামাপদ কর্মকারকে দিয়ে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলিয়েছিলেন অনুব্রত। এমনকী এলাকার সবজি ব্যবসায়ী বিজয় রজককে দিয়ে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলান তিনি।
ইডি জানিয়েছে, জেরায় অভিযুক্তরা জানিয়েছে, অনুব্রতর নির্দেশে সায়গল হোসেন তাদের অ্যাকাউন্ট খুলতে সাহায্য করেন। তবে সেই অ্যাকাউন্টের পাশবই, চেকবই ও ক্রেডিট কার্ড অনুব্রতর কাছেই থাকত। অনুব্রত ইচ্ছামতো সেই টাকা খরচ করতেন বা কাউকে পাঠাতেন। এব্যাপারে বিন্দু বিসর্গ জানেন না তাঁরা।
চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, জেরায় অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যাও একই কথা জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। বাবা অনুব্রত মণ্ডল যেমন নির্দেশ দিতেন তেমন সই করে দিতেন তিনি। ইডির এই চার্জশিটের পরে অনুব্রতর ওপরে চাপ আরও বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। সঙ্গে এও স্পষ্ট হচ্ছে, অনুব্রতর কৃতকর্মের দায় নিতে রাজি নন তাঁর অনুগামীরাও।