পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার কড়া পদক্ষেপ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। শিক্ষক নিয়োগ মামলায় জেলবন্দি অয়ন শীলকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে জেরা করার আবেদন করেন ইডির অফিসাররা। বিশেষ সিবিআই আদালতে ইডি তাদের আবেদনে জানান, অভিযুক্ত অয়ন শীলের বয়ান রেকর্ড এবং জেরা করতে ৩–৪ দিন সময় লাগবে। আদালত সেই অনুমতি দিয়েছে। সুতরাং কড়া পদক্ষেপ করল ইডি।
এদিকে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করতে ১৫ দিন সময়ও লাগতে পারে বলে আদালতে জানান ইডির আইনজীবী। এই বক্তব্যের পর বিচারক ১১ থেকে ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এখন অয়ন শীলের সল্টলেকের বাড়ি থেকে প্রাপ্ত নথি থেকে বহু তথ্য পেয়েছে ইডি। সেগুলিই সামনে রেখে জেরা করতে চায় অয়ন শীলকে বলে সূত্রের খবর। জেরার বিষয়ে তদন্তকারী অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সংশোধনাগারে গিয়ে অয়ন শীলের বয়ান রেকর্ড করবে ইডি। আর সবরকম সহযোগিতা করবে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অয়ন শীল এখনও সেভাবে পুরসভা নিয়োগ নিয়ে মুখ খোলেননি। তবে ইডির জেরার চাপে কতটা তথ্য বেরিয়ে আসবে সেটা দেখার বিষয়।
অন্যদিকে সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে অয়ন শীলের সল্টলেকের অফিসে অভিযান চালায় ইডি। সেখানেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি মিলেছিল। এমনকী পুরসভা নিয়োগ সংক্রান্ত ওএমআর শিট হাতে পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে খবর, অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজোন একাধিক পুরসভায় নিয়োগের বরাত পেয়েছিল। সেটা খতিয়ে দেখতে গিয়ে পুরসভা নিয়োগেও দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। তখন কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। আদালতের অনুমতি পেয়ে সিবিআই এফআইআর দায়ের করে। ইডি ইসিআইআর করে। তদন্ত শুরু করে এই দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন: মাঝরাতে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সংঘাতে রাজ্যপাল
এছাড়া অয়ন শীলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কোনও মন্ত্রীর যোগাযোগ ছিল বলে তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে ইডি। তবে নথি থেকে সেই তথ্য মেলেনি। তাই অয়ন শীলের মুখ থেকেই পুরোটা শুনতে চান তদন্তকারীরা। নথি এবং ওএমআর শিট রাখা হবে অয়ন শীলের সামনে। তারপর একের পর এক প্রশ্ন করা হবে। সূত্রের খবর, বেগতিক বুঝলে অয়ন শীলকে নিজেদের হেফাজতে নিতে পারে ইডি। তাই অয়ন শীলের বয়ান রেকর্ড করতে চলেছে ইডি। একাধিক পুরসভা থেকে ডিজিটাল এভিডেন্স এবং ওএমআর শিট বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। তার কপি দেওয়া হয়েছে ইডিকে। এবার অয়ন শীলকে জেরা করে পর্দাফাঁস করতে চাইছে ইডি।