বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলক নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছিল। কারণ সেখানে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম না থাকলেও জ্বলজ্বল করছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তৎকালিন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, অবশেষে সেখান থেকে ওই নাম বাদ দিতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। ফলক বদলে ফেলার নির্দেশ দেয় শিক্ষামন্ত্রক। আর নতুন করে ফলক বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। এই আবহে এবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের থেকে রিপোর্ট চাইলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ইউনেস্কোর গ্লোবাল হেরিটেজ সাইট হিসেবে বিশ্বভারতী স্বীকৃতি পাওয়ায় নতুন ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কী পরিকল্পনা করা হচ্ছে তা জানতে চেয়েছেন রাজ্যপাল। রাজভবন থেকে এক বিবৃতিতে তা জানানো হয়েছে।
এদিকে ফলকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম কেন নেই? তা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন বিশ্বভারতীর রেক্টর তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি বলেন, ‘গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাংলা, ভারত এবং সমগ্র সভ্য জগতের সাংস্কৃতিক মহত্ত্বের প্রতীক হিসাবে সম্মান করা হয়। বিশ্বভারতীতে স্থাপন করা নতুন ফলকে কবিগুরুকে সম্মানিত করা উচিত।’ আর এবার রাজভবনের উত্তর দিকের গেটের নাম বদলে ‘গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গেট' রাখলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এভাবেই বিশ্বকবিকে সম্মান দিতে চেয়েছেন রাজ্যপাল।
অন্যদিকে রাজভবনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, কবিগুরুর প্রতি সম্মান জানাতে রাজভবনের নর্থ গেটের নামও বদলে ফেলা হচ্ছে। আর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, রাজভবনের ওই নর্থ গেটের নতুন নাম হবে ‘গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গেট’। বাংলার সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই সিভি আনন্দ বোসকে বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে মেতে উঠতে দেখা গিয়েছিল। এবার তা আরও বেশি করে প্রকাশ পেল। তাঁকেই দেখা গিয়েছিল হাতেখড়ি নিয়ে বাংলা শিখতে। বিশ্বভারতীর ফলক বিতর্ক নিয়ে আগেই সরব হয়েছেন বাংলার সাংবিধানিক প্রধান।
আরও পড়ুন: নভেম্বর মাসেই কলকাতায় আসছেন অমিত শাহ, বিজেপির সভায় নতুন ব্যাখ্যা দেবেন
এছাড়া এখন নানা উৎসব–পার্বণে বাংলায় ভিডিয়ো বার্তা দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বারবার তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, আমার বাংলার ভাই–বোনেরা, আমি বাংলাকে ভালবাসি–সহ নানা কথা। সেখানে বিশ্বভারতীর কর্মকাণ্ডে বেজায় চটে যান রাজ্যপাল। ওই ফলক নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন। যদিও এখন আর উপাচার্য নন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দায়িত্ব নিয়েছেন। আর রাজ্যপাল বলেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা তো বটেই, ভারত তথা গোটা বিশ্বের সাংস্কৃতিক জগতের কাছে এক প্রতীক। বিশ্বভারতীতে নতুন ফলকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সম্মানিত করা উচিত।’