পদ্মার ইলিশ বাংলায় আসার কথা ছিল। আমবাঙালি ওত পেতে বসেছিলেন। একবার বাজারে ওপারের ইলিশ আসুক। তারপর ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে স্বাদ পরখ করে নেওয়া হবে। এবার সেই সময় এসে গেল। আজ, বুধবার রাত থেকে বাংলায় ঢুকবে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশ মাছ। হালকা গোলাপী আভার সেই রূপোলি ফসল বৃহস্পতিবার থেকে দেদার বিক্রি শুরু হয়ে যাবে কলকাতা এবং জেলার বাজারগুলিতে। ইতিমধ্যেই বাংলার আকাশে মেঘ ঘনিয়ে আসায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সুতরাং পদ্মার ইলিশ বাঙালির পাতে উঠতেই ইলশেগুড়ি বৃষ্টির আমেজ তৈরি হবে। ইতিমধ্যেই এগ্রিমেন্ট ও ট্রেড লাইসেন্স জটিলতা কেটে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, আজ রাতেই পশ্চিমবঙ্গে রওনা হচ্ছে পদ্মার ইলিশ।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটছে? পদ্মার ইলিশ মাছ বাংলায় ঢোকার কথা ছিল রান্না পুজোর প্রাক মুহূর্তে। ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো ছিল। সেদিন অনেকেই আশা করেছিলেন বাজারে গেলে মিলবে পদ্মার ইলিশ। কিন্তু তার দেখা মেলেনি। গণেশ পুজোর দিনেও খোঁজ করেছিলেন অনেকে। তবে হতাশ হয়েছিলেন। অবশেষে এবার কাটল জটিলতা। এগ্রিমেন্ট সই হওয়ার পর এবার পাতে পদ্মার ইলিশ পড়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। অনেকেই পরিচিত মাছ বিক্রেতাদের বলেও রেখেছেন। ৭০ জন ভারতীয় আমদানিকারকের হাত ধরে ২১ থেকে ২৫টি কনসাইনমেন্টে আজ রাতে সীমান্ত পেরোতে চলেছে পদ্মা–মেঘনার ইলিশ।
তারপর ঠিক কী ঘটবে? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি–২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে এসেছিলেন। তখন কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, বাংলায় ঢুকতে চলেছে পদ্মার ইলিশ। এবার সেই গুঞ্জনে সিলমোহর পড়ল। এই মাঝের সময়টাতে ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছিল। সেটা মিটে যেতেই মোট ৩৫০০ থেকে ৪০০০ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ এই রাজ্যে ঢুকবে। আর তা মিলবে ভাইফোঁটা পর্যন্ত। ভারতে এবার ৫০০০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির ছাড়পত্র দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। তার মধ্যে দেশের অন্যান্য প্রান্তে যাচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ। বাকি পুরোটাই বাংলার বাঙালিদের পাতে।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর পরই নয়া কর্মসূচি তৃণমূলের, প্রত্যেক ব্লকে এখন বসছে জায়ান্ট স্ক্রিন
আর কী জানা যাচ্ছে? ২০২২ সালে ৩৫০০ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ রফতানির অনুমোদন দিয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার। ইতিমধ্যেই দিঘা এবং ডায়মন্ডহারবারের ইলিশ খেয়ে বাঙালি খুশি। এবার পদ্মার ইলিশ চেখে দেখার পালা। দুর্গাপুজো পর্যন্ত ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তবে পদ্মার ইলিশ লক্ষ্মীবার থেকে মিললে বাজারে ভিড় জমবে বলে মনে করা হচ্ছে। দাম এখনও সেভাবে জানা যায়নি। দু’দিন দেরি হলেও অবশেষে ওপারের মাছের স্বাদ পেতে চলেছেন এপারের নাগরিকরা।