তিন মাস কেটেছে। তার মধ্যেই আবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। এবারও সেই মেন হস্টেল। সেখানের ক্যাম্পাসেই র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। তবে এবার বাংলা বিভাগ পাল্টে অভিযোগ উঠেছে দর্শন বিভাগে। এই বিভাগের স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র অভিযোগ তুলেছেন। নিজের নাম গোপন রেখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানান তিনি। দর্শনের স্নাতকোত্তরের ওই পড়ুয়ার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ইমেল করেছেন এক সহপাঠী। র্যাগিংয়ের জেরে ওই ছাত্র হস্টেল পরিবর্তনের আবেদন জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষের কাছে।
এদিকে সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের সিডি ব্লকে থাকতেন ওই প্রথম বর্ষের ছাত্র। কিন্তু এখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দেন ওই ছাত্র। চিঠিতে ওই ছাত্র অভিযোগ উল্লেখ করে লিখেছেন, তাঁকে রোজ হস্টেলে হেনস্থা করা হচ্ছে। তাই এই ঘটনায় নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন। এমনকী ভয়ে অভিযোগ জানিয়ে হস্টেল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তিন মাস আগেই এই র্যাগিংয়ের জন্য এক ছাত্রকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তারপরও র্যাগিং রোগ যায়নি ক্যাম্পাস থেকে। এই ঘটনাকে ঘিরে আবার আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
অন্যদিকে চিঠিতে ওই ছাত্র লিখেছেন যে, হস্টেলে তাঁর উপর নানাভাবে র্যাগিংয়ের চেষ্টা চলে। তাঁকে হেনস্থা করা হয়। কখনও মেসের বাজার নিয়ে গালাগালি, আবার কখনও তাঁকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করা হয়েছে। এমনকী বিষয়টি জানাজানি যাতে না হয় তার জন্য হুমকি দেওয়াও হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ‘বিষয়টি বিচার করছে অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড। র্যাগিং বন্ধ করার একশো শতাংশ চেষ্টা করছি। আশা করছি স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার বোর্ড প্রতিটি ইয়ার অনুযায়ী আলাদা ব্লক করবে। আমার ধারণা সেক্ষেত্রে র্যাগিং ৯৯ শতাংশ কমে যাবে। আশা করি এআরসি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’
আরও পড়ুন: উত্তর ২৪ পরগনা নিয়ে কোর কমিটি গঠন, সংগঠন শক্তিশালী করতে মাস্টারস্ট্রোক মমতার
আর কী জানা যাচ্ছে? গত অগস্ট মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের নীচে বাংলা বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্রের দেহ পাওয়া যায়। তখন অভিযোগ ওঠে র্যাগিংয়ের। ওই ঘটনায় তোলপাড় হয়ে যায় রাজ্য। এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং হেল্পলাইন নম্বর মারফত দুটি অভিযোগ জমা পড়ে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডের চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি পাঠান। এই বিষয়ে জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘আগে এক ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা ঘটে মেইন হস্টেলে। তার পর সাড়ে তিন মাস কেটে গিয়েছে। তদন্ত করে বহু ছাত্রকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। কিন্তু অনেক ছাত্রের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। সেই মেইন হস্টেলেই আবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল। যে ছাত্রের উপরে র্যাগিং হয়েছে বলে অভিযোগ সে হস্টেল ছেড়ে দিয়েছে।’