বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী টিম যখন তদন্তে গিয়েছিলেন তার বাড়িতে, তখন মোবাইল দুটি পাশের এঁদো পুকুরে ছুঁড়ে ফেলেছিলেন তিনি। সেই পুকুরে তন্নতন্ন করে খুঁজে মোবাইল উদ্ধার করেছে তদন্তকারী এজেন্সি। তবে এবার দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কী দাবি করছেন খোদ তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা? মোবাইলে কি কিছু পাওয়া গিয়েছে? এনিয়ে কী বললেন তিনি? শনিবার এনিয়ে মুখ খোলেন তিনি।
মোবাইল প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে জীবনকৃষ্ণ একেবারে ঘাড় নেড়ে বলেন, না না। এরপরেও প্রিজন ভ্যানের ভেতর থেকেও তিনি বলেন না না… কার্যত তিনি জানিয়ে দেন কিছু পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, দল অবশ্যই আমার পাশে আছে। আমি যখন কোনও অন্যায় করিনি তখন কেন পাশে থাকবে না। আমি যে নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত তা কি প্রমাণিত হয়েছে?
এদিকে জীবনকৃষ্ণের বক্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, চোরেরা চোরেদের পাশে থাকবেন এটা নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। তবে মোবাইলে যদি কিছু নাই থাকে তবে কেন সেগুলি পুকুরে ফেলে দেওয়া হল? কেন তিনি পাঁচিল টপকে পালাতে গিয়েছিলেন?
এর আগে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দলের প্রতি আস্থাজ্ঞাপন করেছিলেন। এবার সেই পথেই হাঁটলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। এদিকে সূত্রের খবর, জীবনকৃষ্ণের মোবাইলে ঠিক কী আছে তা নিয়ে গোটা বাংলা জুড়ে উৎসাহ তুঙ্গে। কারণ তল্লাশির সময়ই সেই দুটি মোবাইল ছুঁড়ে ফেলেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। পরে অবশ্য় তিনি জানিয়েছিলেন মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছিল না। সেই রাগেই তিনি মোবাইল ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন।
তবে একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পুকুর থেকে জীবনকৃষ্ণের যে ফোন উদ্ধার করা হয়েছিল তার মধ্যে একটিতে অন্তত শতাধিক অডিও ফাইল পেয়েছে সিবিআই। একটি ফোনেই শ খানেক অডিও ফাইলের সন্ধান পেয়ে হতবাক তদন্তকারীরা। কীভাবে বিধায়কের ফোনে এত অডিও ফাইল এল তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে এই অডিও ফাইলে যে কণ্ঠস্বর রয়েছে তা বিধায়কের কি না তা যাচাই করে দেখা হবে। সেকারণে বিধায়কের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চায় সিবিআই। মূলত ফোনে থাকা অডিওর সঙ্গে সেই কণ্ঠস্বর মিলিয়ে দেখা হবে।
এদিকে তল্লাশি চলাকালীন বাড়ির পাশের পুকুরে দুটি ফোন ফেলে দিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ। তারপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা তল্লাশি চালায় সিবিআই। পুকুরের জল ছেঁচে তুলে ফেলা হয়। জেসিবি নিয়ে এসেও পুকুরের পাঁক কেটে ফেলা হয়। শেষ পর্যন্ত উদ্ধার হয় দুটি ফোন। আর সেই ফোন খোলার পরেই তাজ্জব গোয়েন্দারা।
তবে মোবাইল থেকে সন্দেহজনক কিছু পাওয়ার প্রসঙ্গ কার্যত উড়িয়ে দিচ্ছেন ধৃত তৃণমূল বিধায়ক। সেই সঙ্গেই দলের প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করলেন তিনি।