কলকাতা পুরসভা কাজ শুরু করেছিল আদি গঙ্গার পলি তুলতে। সেটা না করলে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। একদিকে দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছিল না। আর একদিকে টালি নালা বা আদি গঙ্গার উপর কাজ করা যাচ্ছিল না। ড্রেজিং বা পলি তোলার কাজ শেষ হলেই গোটা বিষয়টি সম্ভব বলে মনে করে কলকাতা পুরসভা। প্রথম দফায় দইঘাট থেকে চেতলা সেতু পর্যন্ত পলি তোলার কাজ শেষ হয়েছে। আর দ্বিতীয় দফায় চেতলা সেতু থেকে কুঁদঘাট পর্যন্ত টালি নালার ড্রেজিং এবং পাড় সাফাইয়ের কাজ চলছে। তার পর সেখানেই করা হবে নতুন পদক্ষেপ।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটতে চলেছে? কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, আদি গঙ্গার চেহারা পাল্টে দিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর সেটি প্রায় শেষের মুখে। দ্রুত সেই কাজ করা হচ্ছে। আর এই আদি গঙ্গার সার্বিক চেহারা ফেরাতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাতে সেখানেও উন্নয়ন করা যায়। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভা ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে চেতলা সেতু থেকে ধনধান্যে সেতু পর্যন্ত টালি নালার দু’পাড় বাঁধাইয়ের কাজ শুরু করে দিতে চলেছে। আর এই পাড় বাঁধাইয়ের কাজে ব্যবহার করা হবে বিশেষ ‘জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক’ পদ্ধতি। যা অত্যন্ত মজবুত।
কেন এমন করা হচ্ছে? টালি নালা বা আদি গঙ্গার দু’পাড় অনেকদিন ধরেই ভাঙাচোরা। তার ফলে সেখানের জল বাইরে চলে আসে। তাতে এলাকায় দুর্গন্ধ তৈরি হয়। এখানের ঢালাই এত পুরনো যে তা কালের গতিতে খসে গিয়েছে। নতুন করে ঢালাই এখানে হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিন্তু একসঙ্গে গোটা পাড় বাঁধাই করা সম্ভব নয়। কারণ তাতে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ভার বহন করতে হবে। তাই আপাতত এখন প্রথম দফায় চেতলা সেতু থেকে ধনধান্যে পর্যন্ত দু’পাড় মিলিয়ে প্রায় চার কিলোমিটার পথে বাঁধাইয়ের কাজ হবে। এখানেই জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। তাতে মজবুত, টেকসই এবং মানুষের সুবিধা হবে।
আরও পড়ুন: খাদ্যমন্ত্রীর বাড়ি ত্যাগ করল ইডির টিম, টানা ১৯ ঘণ্টা তল্লাশিতে হাতে কি এল?
আর কী জানা যাচ্ছে? এই কাজ করতে অনেক টাকা খরচ করতে হবে। এই কাজের জন্য এখন ধরা হয়েছে ৮ কোটি ৯৭ লক্ষ ৭ হাজার ৫৫৩ টাকা। সেটা পরে বাড়তেও পারে। সম্প্রতি মেয়র পরিষদের বৈঠকে এই প্রস্তাব তোলা হয়েছিল। আর তাতে সিলমোহর পড়েছে। আগামী অধিবেশনে সেটা পাশ হওয়ার কথা। এবার পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে অর্থ বরাদ্দ হলে কাজ শুরু হবে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই কাজ করার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। দুর্গাপুজোর পর নভেম্বর মাসের শেষে অথবা ডিসেম্বর মাসের শুরুতে এই জিও টেক্সটাইল ফেব্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করে কাজ চালু হবে। এই কাজ সম্পূর্ণ করতে চার থেকে ছ’মাস সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।