ইন্টারনেট এবং কেবল টিভির তার আর মাথার উপর ঝুলবে না। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে মাথার ওপর তারের জঞ্জাল সরানোর অভিযানে নামতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতার রাস্তা জুড়ে এই চিত্র যাতে না থাকে তাই এমন উদ্যোগ। টিভি কেবলের জঞ্জালে আকাশ দেখা যায় না বলে অভিযোগ। এমন তারের জঞ্জাল সরানোর উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। ইতিমধ্যেই হরিশ মুখার্জি রোড এবং আলিপুর রোডে মাথার উপরে থাকা তারের জঞ্জাল সফলভাবে মাটির নীচে ঢুকিয়ে দেওয়া গিয়েছে। এবার গোটা দক্ষিণ কলকাতা এবং উত্তর কলকাতায় এই কাজ করতে চায় কলকাতা পুরসভা বলে খবর।
কোথা থেকে এই কাজ শুরু হবে? কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এবার তার সরানোর অভিযানে নামা হবে। তেমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরসভার ইলেকট্রিক বিভাগ জানাচ্ছে, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, হাজরা, শহিদ আমির আলি অ্যাভিনিউ দিয়ে এই কাজ শুরু হবে। এগুলি দক্ষিণ কলকাতার অন্তর্গত। এখানের মাথার উপর তারের জঞ্জাল মাটির নীচে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কেবল অপারেটদের আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সেই তার সরাতে। মাটির নীচ দিয়ে সেই তার নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছিল। সেই কাজ শুরু হলেও পুরসভা নির্বাচনের জন্য সেটা থমকে যায়। আবার সেই কাজ শুরু করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
কী বলছে ইলেকট্রিক বিভাগ? ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ সদস্য (ইলেকট্রিক) সন্দীপ বক্সি বলেন, ‘একবার এই বিপুল পরিমাণ তার মাটির নীচে নিয়ে যেতে পারলে আর মাথার উপর দিয়ে তার নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। উত্তর কলকাতার বিধান সরণী এবং চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউতে এমন কাজ করা হয়েছে।’ ইলেকট্রিক বিভাগ আরও বেশ কয়েকটি রাস্তাকে চিহ্নিত করেছে। পার্ক স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিট, আশুতোষ মুখার্জি রোড এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডে এই তারের জঞ্জাল সরানো হবে। কেবল অপারেটদের ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার তরফে কেবল অপারেটর এবং ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।
আরও পড়ুন: আমেরিকা যেতে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট, কুণাল ঘোষের সফরে আপত্তি নেই সিবিআইয়ের
আর কী জানা যাচ্ছে? এই উদ্যোগকে টেলিকম অপারেটররা স্বাগত জানিয়েছেন। কারণ বর্ষায় এবং ঘূর্ণিঝড়ের সময় এই তারগুলিতে জড়িয়ে পড়ে গাছ থেকে শুরু করে ল্যাম্পপোস্ট। তাতে অনেক সমস্যা তৈরি হয়। পরিষেবা বিঘ্নিত হয়। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই কাজ করতে ইতিমধ্যেই ২ কোটি টাকা খরচ করেছে পুরসভা। আর এই সার্ভিস প্রোভাইডারদের কাছ থেকে তার জন্য ফি আদায় করা হয়েছে। যা মোট আড়াই কোটি টাকা। সুতরাং এই কাজ করে অর্থ উপার্জন করা যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিমও চান মাথার উপর থেকে তারের জঞ্জাল সরিয়ে মাটির নীচে নিয়ে যেতে।