করোনা আবহে এই প্রথম সোমবার জনসাধারণের জন্য চলল কলকাতা মেট্রো। সাড়ে ৫ মাস পর মেট্রোয় এদিন চাপলেন প্রায় ২০,৫০০ যাত্রী। করোনা সংক্রমণ রুখতে ২৩ মার্চ থেকে বন্ধ থাকা মেট্রো পরিষেবা ফের ব্যবহার করতে পেরে এদিন খুশি যাত্রীরা। যদিও এর আগে রবিবার NEET পরীক্ষার্থীদের জন্য স্পেশাল ট্রেন চালায় মেট্রো।
সংবাদসংস্থা পিটিআই–কে মেট্রো রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশী বলেন, ‘প্রথমদিনই সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেট্রোয় যাত্রা করেছেন প্রায় ২০ হাজার ৫০০ জন যাত্রী। উভয় দিকের প্রান্তিক স্টেশন দুটি থেকে এদিন শেষ মেট্রো ছেড়েছে সন্ধে ৭টার সময় এবং রাত ৮টায় এদিনের মতো মেট্রো পরিষেবা বন্ধ করা হয়।’ যদিও এর আগে এর থেকে অনেকটা বেশি সময় পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা পাওয়া যেত। মনোজ যোশী জানিয়েছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা–সহ সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি এদিন পালন করা হয়।
মেট্রোর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এর আগে প্রতিটি স্টেশনে ২০ সেকেন্ড করে দাঁড়াত মেট্রো। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় মেট্রোয় ওঠা এবং নামার সময় হুড়োহুড়ি ঠেকাতে প্রতিটি স্টেশনে ২০ সেকেন্ডের জায়গায় ৩০ সেকেন্ড করে দাঁড়াচ্ছে মেট্রো। নোয়াপাড়া–কবি সুভাষ রুটে এদিন মোট ১১০টি ট্রেন চালানো হয়েছে। অর্থাৎ আপ ও ডাউনে ৫৫টি করে ট্রেন চলেছে। অভিস টাইমে ১০ মিনিটের ব্যবধান অনুযায়ী চালানো হয়েছে ট্রেনগুলি। অন্যদিকে, ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোতে সেক্টর ফাইভ–সল্টলেক স্টেডিয়াম রুটে এদিন মোট ৭২টি ট্রেন চালানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, স্টেশন এবং ট্রেন রেকগুলির স্যানিটাইজেশনের জন্য রবিবার করে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে।
ভিড় এড়াতে একটি ট্রেন সর্বাধিক ৪০০ জন যাত্রী নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এদিন বেশিরভাগ যাত্রীই অনলাইনে টিকিট কেটে ই–পাস ডাউনলোড করে স্টেশনে প্রবেশ করেন এবং তাঁদের সেখানে শারীরিক তাপমাত্রাও মাপা হয়। কিংশুক বসু নামে এক যাত্রী বলছিলেন, ‘এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানাই। সবকিছুই খুব সুষ্টুভাবে পরিচালনা করা হয়েছে। পাশাপাশি মেট্রোর কর্মীরাও প্রতি পদক্ষেপে খুবই সহায়তা করেছেন। আশা করি এই পরিষেবা একইরকম ভাবে ভবিষ্যতেও মিলবে। আসলে মেট্রো ছাড়া আমাদের চলবে না।’
এদিন আর এক মেট্রোযাত্রী অপর্ণা মাইতি বলেন, ‘এই মুহূর্তে স্পর্শহীন টিকিট ব্যবস্থাই সবচেয়ে উপযুক্ত। মধ্যবয়সী সন্দীপ তিওয়ারি জানান, শোভাবাজার স্টেশন থেকে ওঠার সময় ই–পাস ডাউনলোডের ক্ষেত্রে তাঁর কিছুটা সমস্যা হয়। মেট্রোর এক কর্তা জানান, ট্রেনে ওঠার আগে প্রত্যেক যাত্রীকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং হাত স্যানিটাইজ করতে হবে। একইসঙ্গে শিশু, প্রবীণ নাগরিক এবং যাঁরা জ্বর, সর্দি–কাশিতে ভুগছেন বা ভুগেছেন তাঁদের সকলকে আপাতত মেট্রোয় চাপতে নিষেধ করেছে কর্তৃপক্ষ।