চাল, চাকরি, কয়লা, গরুর পরে এবার রাজ্যে উঠল মৃতদেহ পাচারের অভিযোগ। অভিযোগ কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগ থেকে উত্তর পূর্ব ভারতের একটি মেডিক্যাল কলেজে বছর ২০টি দেহ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাও সেই দেহ পাঠাতে হবে বিগত শিক্ষাবর্ষের জন্য। এতেই আপত্তি তুলেছেন চিকিৎসাবিজ্ঞান শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত প্রবীণ চিকিৎসকরা। তাঁদের অভিযোগ, এতে দান করা দেহের অপব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের জারি করা এক নির্দেশিকায় ২০২৩ – ২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য উত্তর পূর্ব ভারতের একটি মেডিক্যাল কলেজকে ২০টি দেহ পাঠাতে বলা হয়েছে। এতেই আপত্তি করেছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রবীণ অধ্যাপকেরা। তাঁদের প্রশ্ন, একটি মেডিক্যাল কলেজে ২৫০ জন ছাত্রছাত্রীর স্নাতক স্তরের পড়াশুনোর জন্য বছরে ৬টি দেহ যথেষ্ট। আর কোথাও স্নাতকোত্তর পড়ানো হলে সেখানে সর্বোচ্চ ১০টি দেহের প্রয়োজন হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু একটি শিক্ষাবর্ষে ২০টি দেহ লাগবে কেন? তাও আবার যে শিক্ষাবর্ষ প্রায় শেষ হতে চলেছে? তাঁদের আশঙ্কা এর পিছনেও কোনও দুর্নীতি থেকে থাকতে পারে।
গোটা ঘটনায় উঠে এসেছে বিদ্যুৎ দাস নামে এক চিকিৎসকের ভূমিকা। অভিযোগ, তিনিই উত্তর – পূর্বের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের হয়ে কলকাতার হাসপাতালগুলির সঙ্গে মধ্যস্থতা করে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, এব্যাপারে মধ্যস্থতার কী প্রয়োজন। অ্যানাটমি বিভাগের অধ্যাপকেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন ধরে চক্ষু ও দেহদান আন্দোলন চলায় পশ্চিমবঙ্গে, বিশেষ করে কলকাতায় দেহ দানের সংখ্যা অনেক বেশি। রাজ্যে বছরে যে সংখ্যায় দেহ দান হয় তা মেডিক্যাল কলেজগুলির প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। আবেদনের ভিত্তিতে সেই দেহগুলি ভিনরাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে পাঠানো হয়। কিন্তু একটি মেডিক্যাল কলেজকে পুরনো শিক্ষাবর্ষের জন্য ২০টি দেহ কেন? এব্যাপারে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া না হলেও জানানো হয়েছে, বিদ্যুৎ দাসের ভূমিকা খতিয়ে দেখবে তারা।