আজ, রবিবার বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রে জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অসিতকুমার মালের সমর্থনে সভা করার সময় অনুব্রত মণ্ডলের প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বিজেপিকে তোপ দাগেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ২০১৯ সালে এই লোকসভা কেন্দ্র থেকেই জয়ী হন অসিত মাল। তাঁর বিপক্ষে বিজেপি এবার পিয়া সাহাকে প্রার্থী করেছে। জনসভার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কীর্তি আজাদের সমর্থনে রোড–শো করেন। এখান থেকেই বিজেপিকে একহাত নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা, ‘কেষ্ট কে ধরে রেখেছে কেন? নির্বাচনের জন্য। ওকে বলেছে তুমি বিজেপিকে মদত করে দাও, তোমায় ছেড়ে দেব। দেখবেন বীরভূমের ভোট হয়ে যাবে, কেষ্টও ছাড়া পেয়ে যাবে।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশা, একদিন না একদিন জেল থেকে মুক্তি পাবে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা। নির্বাচনী প্রচারে বীরভূমে দাঁড়িয়ে অনুব্রত মণ্ডলের ঢালাও প্রশংসা করলেন তিনি। বিজেপির উপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অমর্ত্য সেনকে জমিহারা করে দিতে চেয়েছিল। সে দিন আমরা সবাই রুখে দাঁড়িয়ে ছিলাম। বিশ্বভারতীর উপাচার্য কী করেছিলেন সে দিন? বীরভূমের বদনাম করে দিয়েছিলেন। বিজেপি বলছে এই ওসিটাকে চেঞ্জ করতে, করে দিচ্ছে। ডিআইজি পাল্টে দিচ্ছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে যা করতে বলছে, তাই করছে। এটা কি নির্বাচন কমিশন? তিন জনই বিজেপির কোলের সন্তান। বিজেপি কয়লা মাফিয়া। ওদের মন্ত্রীরা টাকা খান। গরু আমাদের বিষয় নয়। ওটা বিএসএফ দেখে।’
আরও পড়ুন: ‘বাংলার মা–বোনেদের আত্মসম্মান নিয়ে খেলবেন না’, সন্দেশখালি ইস্যুতে তোপ মমতার
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের শুরু থেকেই অনুব্রত মণ্ডল দলের অন্যতম একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। বীরভূমের মাটিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন। আজ যদিও সেটা অতীত। বীরভূমের জেলা সভাপতি পদে তাঁকে বসিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁকে বীরভূমের পর পূর্ব বর্ধমানের সংগঠন দেখার দায়িত্বও দিয়েছিলেন। আর প্রায় কোনও নির্বাচনেই অনুব্রতর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও দুটি আসন এখান থেকে তুলে দিয়েছিলেন কেষ্ট। তাই তৃণমূলনেত্রীর বক্তব্য, ‘মোদীর দল, ক্ষমতা থাকলে আমার আর অভিষেকের নাম নিয়ে বিজ্ঞাপন করো। আমি দেখতে চাই কত বড় বুকের পাটা। অনেক উন্নয়ন বীরভূমে হয়েছে। বীরভূমের অনেক সেতু, রাস্তাঘাট হয়েছে। কেষ্ট আজকে জেলে থাকলেও আমি বিশ্বাস করি ছেলেটা উন্নয়নকে হাতের মুঠোয় রেখে কাজ করত।’
অন্যদিকে অনুব্রত মণ্ডলকে ২০২২ সালে গরু পাচারের অভিযোগে সিবিআই গ্রেফতার করে। এখন তিনি নয়াদিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি। তা সত্ত্বেও অনুব্রত মণ্ডলকে দলের পদ সরানো হয়নি। বরং বারবার তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘বিজেপি সাজিয়ে গুছিয়ে কেস করেছে। তাতে কী? একদিন না একদিন তো বেরোবেই। কেজরিওয়ালকেও তো আটকে রেখেছে। হাতে সিবিআই আছে, ইনকাম ট্যাক্স আছে। বিচারব্যবস্থাও অনেকেটা কিনে ফেলেছে ওরা। তারপরও পারবে না।’