খাদ্য ভবনে কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল নিজের সার্ভিস রিভলভার দিয়ে আত্মহত্যার পরেই উঠেছে বড়সড় প্রশ্ন। লালবাজারের নির্দেশ রয়েছে, কোনও পুলিশ কর্মী মানসিক অবসাদে থাকলে সেক্ষেত্রে স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট ক্লাস এবং কাউন্সেলিং করাতে হবে। শুধু তাই নয় অবশেষে থাকা কর্মীদের হাতে অস্ত্র দেওয়া যাবে না। তা সত্ত্বেও কীভাবে ওই পুলিশকর্মীর হাতে অস্ত্র এল? তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে লালবাজার। সে ক্ষেত্রে কারও গাফিলতি রয়েছে কিনা তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে পুলিশ কর্মীর মানসিক অবসাদ নিয়ে যে নির্দেশ রয়েছে সে বিষয়ে জোর দিতে বলেছে লালবাজার।
আরও পড়ুন: খাদ্যভবনে নিজের সার্ভিস রিভলবার থেকে গুলিবিদ্ধ কনস্টেবল, আত্মঘাতী, অনুমান পুলিশের
খাদ্যভবনের ভিতরে পুলিশের ব্যারাক রয়েছে। সেই ব্যারাক থেকে বড়দিনের রাত ১১টা নাগাদ ডিউটিতে যাচ্ছিলেন রির্জাভ ফোর্সের কনস্টেবল তপন পাল। সেই সময় হঠাৎ গুলির শব্দ শোনা যায়। ঘটনাস্থলে ছুটে যান সহকর্মীরা। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় কনস্টেবলকে। পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন তপন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তখন বাবু প্রায়ই সহকর্মীদের বলতেন তিনি আর বেঁচে থাকতে চান না। যদিও ডিউটির ১০ মিনিট আগে পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে কথা বলে আত্মহত্যার বিষয়টি বিন্দুমাত্র বুঝতে পারেননি সহকর্মীরা। অন্যান্য দিনের মতোই ওই দিন রিজার্ভ ফোর্সের ডি কোম্পানির অস্ত্রাগার থেকে গুলি ভর্তি রিভলভার তুলে নিয়েছিলেন তিনি। এই সময় ডিউটি সংক্রান্ত কথা বলতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ ব্যারাকে থাকার ফলে অনেক পুলিশ কর্মীর মধ্যে মানসিক অবসাদ দেখা দেয়। কিন্তু, নদিয়ার হরিণঘাটার বাসিন্দা তপন মাঝেমধ্যেই বাড়ি যেতেন।
তবে বাইরে থেকে দেখে মানসিক অবসাদ অনেকের বোঝা যায় না। আবার অনেকেও সে কথা প্রকাশ করতে চান না। ফলে ডিউটির জন্য অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ কর্মীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেন ওসি বা অস্ত্রাগারের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা। আর তারপরে অঘটন ঘটানোর সম্ভবনা থাকে। জানা গিয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মীদের অবসাদ কাটাতে সাধারণত কাউন্সেলিং করা হয়। আবার যারা মানসিক অবসাদে থাকেন তাদের হাতে অস্ত্রও দেওয়া হয় না। এই ঘটনার পরে এই সমস্ত বিষয়গুলির উপর আরও জোর দিতে চাইছে লালবাজার। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা যাতে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মানসিক অবসাদ জানার চেষ্টা করেন সে বিষয়টির উপর জোর দিচ্ছে লালবাজার।