শনিবার ভোরে কিড স্ট্রিটে এমএলএ হোস্টল থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মৃতদেহ। জানা যায়, মৃত ব্যক্তি পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীব লোচন সোরেনের দেহরক্ষী। নাম জয়দেব গড়াই। এই ঘটনায় এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করল মৃত জয়দেবের পরিবার ও বন্ধুরা। তাঁদের অভিযোগ, জয়জেব গোপন কিছু জেনে ফেলেছিল বলেই হয়ত তাঁকে খুন করা হয়েছে। এই আবহে জয়দেবের মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁরা। এই বিষয়ে এক বাংলা খবরের চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে মুখ খোলেন জয়দেবের বন্ধু সঞ্জয় গড়াই। তাঁর বক্তব্য, জয়দেব সব সময় হাসিখুশি থাকতেন। তিনি যে আত্মহত্যা করতে পারেন, এই কথা বিশ্বাস হচ্ছে না সঞ্জয়ের। আত্মহত্যার কোনও কারণও তাঁদের মাথায় আসছে না বলে জানান সঞ্জয়। এই আবহে বন্ধুর মৃত্যুর তদন্ত দাবি করছেন তিনি। পাশাপাশি দোষীদের শাস্তিরও দাবি তুলেছেন সঞ্জয়। তাঁর দাবি, কোনও গোপন তথ্য জেনে ফেলাতেই জয়দেবকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। (আরও পড়ুন: ছন্নছাড়া বিরোধী জোট, '৪০ আসন' মন্তব্যের জবাবে মমতাকে নিয়ে বিস্ফোরক অধীর)
আরও পড়ুন: বাংলা থেকে এবার রাজ্যসভা ভোটে কাকে প্রার্থী করবে BJP? 'শর্টলিস্ট' ৪টি নাম
শনিবার কী ঘটেছিল এমএলএ হোস্টেলে? গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভোর পাঁচাটা নাগাদ ২ নম্বর গেটের ক্যাম্পাসে কিছু একটা পড়ার শব্দ শোনেন হোস্টেলের কর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ছুটে আসেন। দেখেন ৪১৯ নম্বর ব্যালকনির মাটিতে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীব লোচেন সোরেনের নিরাপত্তারক্ষীর দেহ পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। জানা যায়, জয়দেব রাজ্য পুলিশের কর্মী ছিলেন। ২০১২ সালে তিনি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। বর্তমানে বান্দোয়ানের বিধায়কের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার সিমলাপাল থানার বাঁশি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন জয়দেব। তাঁর মৃত্যুর কথা পরিবারকে জানায় স্থানীয় থানা।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বারান্দা থেকে পড়েই তার মৃত্যু হয়েছে জয়েদেবের। তবে এই ঘটনা খুন, আত্মহত্যা নাকি দুর্ঘটনা, তা স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ। এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফরেনন্সিক টিম বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছে। তদন্তকারী আধিকারিকরা ওই নিরপত্তারক্ষীর ঘরে ঢুকে তাঁর জিনিসপত্র তল্লাশি করে দেখেন। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে এমএলএ হোস্টেলে যান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ জানাচ্ছে, ঘটনার সময় নাকি ওই নিরাপত্তারক্ষী মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। এই আবহে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, দুর্ঘটনার জেরেই প্রাণ গিয়েছে জয়দেবের। তবে তদন্ত এখনও চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে।