লোকসভা নির্বাচনের আগেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্যসভার নির্বাচন। বাংলার পাঁচটি আসনে হবে ভোট। এর মধ্যে চারটি আসনে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। আর একটি আসনে প্রার্থী দেবে বঙ্গ বিজেপি। তবে কে হবে সেই প্রার্থী? এখন তা নিয়েই জোর জল্পনা চলছে। এর আগে বাংলা থেকে রাজ্যসভায় গ্রেটার নেতা অনন্ত মহারাজকে পাঠিয়েছিল বিজেপি। উত্তরবঙ্গের ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেই বঙ্গভঙ্গের দাবি জানানো এই নেতাকে সংসদের উচ্ছকক্ষে পাঠিয়েছিল পদ্মশিবির। আর লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে এবারের ভোটে বিজেপি কাকে প্রার্থী করে, তা নিয়ে জল্পনা চরমে। এরই মধ্যে শনিবার বিজেপির সল্টলেকের অফিসে রাজ্যসভার প্রার্থী নিয়ে বৈঠক হয় বলে জানা গিয়েছে। এই আবহে চারজন সম্ভাব্য প্রার্থীর নামও নাকি বাছাই করা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত বাছাই করবেন দিল্লির নেতৃত্বই। (আরও পড়ুন: মলদ্বীপের বোটে ভারতীয় জওয়ান কেন? বিতর্কের মাঝে দিল্লিকে প্রশ্ন মুইজ্জু সরকারের)
আরও পড়ুন: ছন্নছাড়া বিরোধী জোট, '৪০ আসন' মন্তব্যের জবাবে মমতাকে নিয়ে বিস্ফোরক অধীর
এদিকে কার কার নাম বঙ্গ বিজেপির নেতারা রাজ্যসভার জন্য বাছাই করেছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা বজায় রয়েছে। এই প্রসঙ্গে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধুকারী বলেন, 'সংবাদমাধ্যমে তো আর নাম বলা যায় না। আমরা নিয়ম মেনে নাম বাছাই করেছি। দিল্লির নেতারা তা খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।' রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বিজেপির রাজ্যসভা প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: নবীনকে 'বন্ধু' আখ্যা মোদীর, দুই নেতার 'ব্রোম্যান্সে' বিজেপি-বিজেডি জোটের জল্পনা
উল্লেখ্য, দেশের ১৫টি রাজ্যের মোট ৫৬টি রাজ্যসভা আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি। এর মধ্যে ১৩টি রাজ্যের ৫০টি আসনের সদস্যদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২ এপ্রিল। আর দুই রাজ্যের ৬টি আসনের সদস্যদের মেয়াদ শেষ হবে ৩ এপ্রিল। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও যে সব রাজ্যগুলিতে ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে তার মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান, কর্ণাটক, উত্তরাখণ্ড, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, হরিয়ানা এবং হিমাচল প্রদেশ।
উল্লেখ্য, ২ এপ্রিলে মেয়াদ শেষ হবে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ নাদিমুল হক, আবিররঞ্জন বিশ্বাস, শুভাশিস চক্রবর্তী ও শান্তনু সেনের। এছাড়া বাংলা থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য অভিষেক মনু সিংভিরও মেয়াদ শেষ হবে সেদিন। এই সবকটি আসনেই ভোটগ্রহণ হবে ২৭ তারিখ। খাতায়কলমে তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ২১৬। এছাড়া অন্য দল থেকে আসা বিধায়ক মিলিয়ে সেই সংখ্যা ২২৫। এই আবহে তৃণমূলের চারটি আসনে জয় নিশ্চিত। তবে একটি আসনে প্রার্থী দিতে পারে বিজেপি। এই আবহে লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যসভা নির্বাচন ঘিরে বাংলার রাজনীতিতে জোর চর্চা চলছে।
এর আগে গতবছর রাজ্যসভার ছয় আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠি হয়েছিল এবং একটি আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে তৃণমূল রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিল ডেরেক ও'ব্রায়েন, দোলা সেন, সুখেন্দুশেখর রায়, সমিরুল ইসলাম, প্রকাশ চিক বড়াইককে। আর উপনির্বাচনের মাধ্যমে সাকেত গোখলেও রাজ্যসভা সদস্য হয়েছিলেন গতবার। সমিরুল সমাজকর্মী এবং প্রকাশ উত্তরবঙ্গের নেতা। এরা দু'জনেই সংসদীয় রাজনীতিতে নয়া মুখ। এবারও তৃণমূল দু'টি আসনে 'চমক' দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।