বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > কলকাতা > ‘‌তিন মাসের মধ্যে পুলিশের সব নিয়োগ শেষ করতে হবে’‌, নবান্ন থেকে নির্দেশ মমতার

‘‌তিন মাসের মধ্যে পুলিশের সব নিয়োগ শেষ করতে হবে’‌, নবান্ন থেকে নির্দেশ মমতার

পাঁচ বছর ধরে প্রশিক্ষণে আমরা যে অরিজিনাল ডাক্তার পাচ্ছি, তাদের অনেকটা সময় যাচ্ছে। পড়াশোনা–পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। কিন্তু যেহেতু হাসপাতাল বাড়ছে, লোকসংখ্যা বাড়ছে, বেড বাড়ছে তাই যদি সমান্তরালভাবে একটি ডিপ্লোমা কোর্স করে অন্তত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে কাজে লাগানো যায়, তাহলে মনে হয় ভাল ফল মিলবে।

নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আগামী তিন মাসের মধ্যে পুলিশ বিভাগের সমস্ত পদে নিয়োগ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে উৎকর্ষ বাংলা সম্পর্কিত পর্যালোচনা বৈঠকের পর এই নির্দেশ দেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি পুলিশ বিভাগে নিয়োগের বিষয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন। যা নিয়ে এখন জোর আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যে পলিটেকনিক কলেজ ও নার্সিং কলেজের সংখ্যা এবং স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের সাফল্যের কথা বলছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে রাজ্যে কত যুবক–যুবতীর কর্মসংস্থান হয়েছে তাও বৈঠকে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তখনই পুলিশের নিয়োগ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ এখন পুলিশের অনেকগুলি পদ ফাঁকা রয়েছে। আবেদন করেও চাকরি পাচ্ছেন না বাংলার যুবক–যুবতী। পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গা–ছাড়া মনোভাব চলে এসেছে বলে উষ্মাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আগে যখন পুলিশে লোক নেওয়া হতো, ৬ মাস প্রশিক্ষণ দিতে হতো। এখন হাজার হাজার নিয়োগ পড়ে রয়েছে। একটা ল্যাথার্জি ও ক্যাজুয়ালনেস চলে এসেছে। আজ করছি, কাল করছি। কারণ, যে নিয়োগ করছে তার কিছু যায়–আসে না। কিন্তু যে ছেলে–মেয়েগুলি পরীক্ষা দেন, তাঁরা তো আশায় থাকে চাকরিটা কবে হবে। আমি স্পষ্ট বলছি, তিন মাসের মধ্যে পুলিশের সব নিয়োগ শেষ করতে হবে।’‌

এদিকে বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদি–সহ বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রী এবং বেঙ্গল চেম্বার্স অফ কমার্সের প্রতিনিধিরা। সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌এতদিন ৬ মাস ধরে, ৩ মাস ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। সেটা এখন সাতদিন প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর তাঁদের এক–একটি থানায় পাঠান। সেখানে ফোর্স বাড়ান। এরপর যখন ফিল্ড ট্রেনিং দেওয়া হবে, তখন সাতদিন করে অন্যান্য ট্রেনিং দেওয়া হোক। মাসের মধ্যে সাতদিন ট্রেনিং দিন, ২১ দিন ফিল্ডে কাজ করান।

নার্সিং ট্রেনিং নিয়ে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ নার্সিংয়ের প্রশিক্ষণ বিষয় নিয়েও আজ নবান্নের বৈঠক থেকে পরামর্শ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‌স্যালাইন দেওয়া, ইঞ্জেকশন দেওয়া, অক্সিজেন দেওয়া অথবা ওষুধটা দেখে ঠিকমতো দেওয়া, তার জন্য প্রশিক্ষণ নিতে ১৫ দিন যথেষ্ট। নার্সরা তো আর অপারেশন করবে না। যাঁরা সিনিয়র নার্স, তাঁরা তো সেখানে আছেন। যাঁদের নতুন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, তাঁদের জুনিয়র নার্স হিসেবে বিবেচনা করা হোক, ট্রেনিং দেওয়া হোক। অনেক হাসপাতাল হচ্ছে, যেখানে ডাক্তার নেই, নার্স নেই। ডাক্তারদের একটা ডিপ্লোমা কোর্স চালু করা যায় কি না দেখো, ইঞ্জিনিয়ারদের মতো। অনেক ছেলেমেয়ে ডাক্তারি ডিপ্লোমা কোর্সের সুযোগ পাবে। এতে পাঁচ বছর ধরে প্রশিক্ষণে আমরা যে অরিজিনাল ডাক্তার পাচ্ছি, তাদের অনেকটা সময় যাচ্ছে। পড়াশোনা–পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। কিন্তু যেহেতু হাসপাতাল বাড়ছে, লোকসংখ্যা বাড়ছে, বেড বাড়ছে তাই যদি সমান্তরালভাবে একটি ডিপ্লোমা কোর্স করে অন্তত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে কাজে লাগানো যায়, তাহলে মনে হয় ভাল ফল মিলবে।’‌