এমনিতেই এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাপট দেখা যাচ্ছে। শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি থেকে কয়লা–গরু পাচারের তদন্ত করছে ইডি–সিবিআই। এখন রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা বাজলেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই তৎকালিন শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনকে তলব করেছে সিবিআই। আর আজ, বুধবার নারদ মামলায় সিবিআইকে চার মাস সময় বেঁধে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। যদিও এটা শুধু আরামবাগের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে সেটাতেই এই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।
এদিকে নারদ কাণ্ডে দেখা গিয়েছিল বহু নেতা–নেত্রীই হাত পেতে টাকা নিয়েছেন। সেখানে শুধু অপরূপা পোদ্দারের বিরুদ্ধে এমন নির্দেশ কেন? উঠছে প্রশ্ন। আদালত সূত্রে খবর, কিছুদিন আগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নারদ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত আরামবাগের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। সেখানে তিনি জানান, সিবিআইকে চিঠি দিয়ে তিনি বলেছেন, তাঁর নাম নারদ মামলা থেকে প্রত্যাহার করে নিতে। কারণ গত আট বছরে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ মেলেনি। সুতরাং তাঁকে ঝুলিয়ে রাখা বন্ধ করা হোক। আজ, বুধবার আদালতে অপরূপা বলেন, ‘সিবিআই এখনও ওই চিঠির কোনও উত্তর দিতে পারেনি।’
অন্যদিকে বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তাই এখন থেকেই ঘর গোছাতে চাইছেন আরামবাগের সাংসদ। সেখানে এই মামলায় আজ কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে চার মাস সময় বেঁধে দিয়েছে। আর বিচারপতি বলেছেন, সংশ্লিষ্ট বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই সিবিআইকে তদন্ত শেষ করতে হবে। না হলে অপরূপা পোদ্দারকে নারদ মামলা থেকে মুক্তি দিতে হবে। আর এতেই বেকায়দায় পড়ে গিয়েছে সিবিআই। কারণ অপরূপাকে অভিযুক্তের কাঠগড়ায় দাঁড় করালে বাকিদেরও একসারিতে নিয়ে আসতে হয়। সুতরাং অপরূপার ক্ষেত্রে সিবিআইকে চার মাস সময় বেঁধে দিলেও আদতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকেই চাপে রাখল কলকাতা হাইকোর্ট।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই নারদ মামলায় অনেকের নাম ছিল। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ প্রয়াত হয়েছেন। আবার কেউ অন্য দলে চলে গিয়েছেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সেটার প্রমাণ। সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদ প্রয়াত হয়েছেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারদ স্টিং অপারেশন ফাঁস হয়েছিল। বিজেপি পার্টি অফিস থেকে তা দেখানো হয়েছিল। তবে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় এই নিয়ে বিজেপিও বেশি কথা বাড়ায় না। সেখানে সিবিআই এবার কি করে সেটাই দেখার বিষয়।