যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের মৃত পড়ুয়াকে যেভাবে র্যাগিং করা হয়েছে তা ‘বিরলতম’। আদালতে এমনটাই দাবি করলেন সরকারি আইনজীবী। মঙ্গলবার পুলিশের হয়ে সরকারি আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াকে নগ্ন করে বারান্দায় হাঁটানো হয়েছিল। এভাবেই চলেছিল র্যাগিং। ঘটনার সময় ধৃত ১৩ জন উপস্থিত ছিল বলে আদালতে দাবি করেন সরকারি আইনজীবী। তাঁর দাবি, এ ঘটনায় এখনও বেশ কিছু তথ্য জানার বাকি রয়েছে।
আরও পড়ুন: 'আমি নিজে ব়্যাগিংয়ের শিকার, প্রয়োজন কাউন্সেলিং', আদালতে দাবি ধৃত JU-র পড়ুয়ার
মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় ধৃত সৌরভ চৌধুরী, মনোতোষ ঘোষ এবং দীপঙ্কর দত্তকে। সরকারি আইনজীবী গোপাল হালদার আদালতে দাবি করেন, এই পুরো ঘটনার মাস্টারমাইন্ড হল সৌরভ চৌধুরী। পুলিশ এক পড়ুয়ার মোবাইল থেকে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট পেয়েছে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কীভাবে উত্তর দিতে হবে তা ধৃতদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আর এই সমস্ত কিছু শিখিয়েছিল সৌরভ। সেই কারণেই তাকে এই পুরো ঘটনার কিংপিন বলে মনে করছে পুলিশ। যদিও এদিনও আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন সৌরভ। অন্যদিকে, মনোতোষের আইনজীবী দাবি করেন, মনোতোষ প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে রেখেছিল। তার বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের কোনও অভিযোগ নেই। শুধু তাই নয়, মনোতোষ নিজেই র্যাগিংয়ের শিকার বলে দাবি করেন আইনজীবী। তাঁর দাবি মনোতোষ পড়াশোনায় ভালো। তাই তার কাউন্সিলিং করা হোক। একই দাবি করেছেন দীপশেখরের আইনজীবী। এদিকে, পালটা সরকারি আইনজীবী জানান, কেউ র্যাগিংয়ের শিকার হলে যে অন্য কাউকে র্যাগিং করে মারবে সেটা হয় না।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের ভিত্তিতেই সৌরভকে ষড়যন্ত্রের মাথা বলে মনে করা হচ্ছে বলে সরকারি আইনজীবী জানান। এই ঘটনায় আরও বেশ কয়েকদিন তাদের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়ছে পুলিশ । আদালত সৌরভ চৌধুরীকে ২৫ অগস্ট এবং মনোতোষ ও দীপশেখরকে ২৬ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। অন্যদিকে, পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় শুধু ধৃতরাই নয় আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে। ইতোমধ্যে এই ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রনেতা অরিত্র মজুমদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এছাড়া আজ বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটিতে তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া এই ঘটনায় পুলিশের নজরে রয়েছে তৃতীয় বর্ষের আরও এক ছাত্র। আজ তাকে যাদবপুর থানায় ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ। সব মিলিয়ে ঘটনার তদন্তে তৎপরতার সঙ্গে জাল গুটিয়ে আনতে চাইছেন তদন্তকারীরা।