যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় কাণ্ড চলছে রাজ্যজুড়ে। তারপর থেকে নানা ঘটনা সামনে উঠে আসছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রও র্যাগিংয়ের অভিযোগ তোলেন। তাতে আরও শোরগোল পড়ে যায়। এবার বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের হস্টেলে এক ছাত্রকে র্যাগিং এবং নিগ্রহের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় সাফাইকর্মী ও দু’জন নিরাপত্তারক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করল কলকাতা পুলিশ। তাতে জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে শহরে।
এদিকে মঙ্গলবার প্রায় তিন ঘণ্টা টানা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী অফিসাররা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিগঞ্জ ক্যাম্পাসে জুট অ্যান্ড ফাইবার টেকনোলজি বিভাগের ছাত্রকে র্যাগিং করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তার জেরেই এই জিজ্ঞাসাবাদ। তবে এই আবহে অ্যান্টি ব়্যাগিং হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি এই ইস্যুতে নিজের মতামতও প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর গলায় ছিল আক্ষেপের সুর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্ত চাপে পড়ে মেনে নিতে হয়েছে। আর তাতেই মেজাজ হারিয়ে উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ বলেন, ‘চুটকিতে সব হয় না।’
অন্যদিকে র্যাগিং রুখতে মঙ্গলবার অ্যান্টি র্যাগিং হেল্পলাইন নম্বর চালু করলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেউ ব়্যাগিংয়ের শিকার হলেই এই হেল্পলাইন নম্বরে ২৪ ঘণ্টা ফোন করা যাবে। অর্থাৎ সকাল–বিকেল–সন্ধ্যা–রাত যখনই হোক এই নম্বরে ফোন করা যাবে বলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। হেল্পলাইন নম্বর হল ১৮০০৩৪৫৫৬৭৮। ইতিমধ্যেই এই হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। এই নম্বরে ফোন করলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করবে পুলিশ–প্রশাসন। জেলার ‘অ্যান্টি র্যাগিং’ কমিটির থেকে রিপোর্ট তলব করা হবে বলেও জানিয়েছে নবান্ন।
আরও পড়ুন: সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী, নবান্নের সভাঘরে কি আসবেন বিরোধী বিধায়করা?
এই পরিস্থিতিতে গত ৭ জুলাই বালিগঞ্জ থানায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ করেন ওই ছাত্র। ঠিক তার পরের দিন এফআইআর করা হয়। ইতিমধ্যেই আলিপুর আদালতে ওই ছাত্রের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। ওই ছাত্রের অভিযোগ, গত চার বছর ধরে হস্টেলে র্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়েছে। এই বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওই ছাত্রের। তবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, যাঁরা ওই নম্বরে ফোন করবেন, তাঁদের পরিচয় গোপন রাখা হবে। তাঁদের পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হবে না। কেউ র্যাগিংয়ের শিকার হলে কোনওরকম ভয় না পেয়ে হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করার আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।