এর আগে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ বাজেয়াপ্ত করেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। আর এবার রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ম্যারাথন অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণ নগদ অর্থ বাজেয়াপ্ত করল ইডি। জানা গিয়েছে, কলকাতার অঙ্কিত ইন্ডিয়া লিমিটেড নামক একটি প্যাকেটজাত আটা তৈরির সংস্থার অফিস থেকে ১ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার করেছে ইডি। জানা গিয়েছে, এই সংস্থার একটি অফিস আছে জগদীশচন্দ্র বসু রোডে। এই সংস্থারই কারখানা ও অফিস আছে বনগাঁ, নদিয়াতেও। সেই সব জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে মোট ১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এছাড়াও আরও একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে আরও ৪০ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে ইডি। এই আবহে ২৭ ঘণ্টায় ইডি ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা নগদ টাকা উদ্ধার করেছে। এরই সঙ্গে রেশন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথিও নাকি উদ্ধার করেছে ইডি। এছাড়াও মেসার্স এজে অ্য়াগ্রোটেক এবং মেসার্স এজে রয়্যাল প্রাইভেট লিমিটেড নামে দুটি পার্টনারশিপ কোম্পানির অ্যাকাউন্টে থাকা থাকা ১৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকাও বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। (আরও পড়ুন: মামলায় প্রভাব খাটানোর অভিযোগ কলকাতা HC-র বিচারপতির স্বামীর বিরুদ্ধে, কী বলল SC?)
জানা গিয়েছে, এর আগে বাকিবুরকে যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল এবং তাঁর শ্যালকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে যে নথি উদ্ধার হয়েছিল, তার ভিত্তিতে প্রশ্নমালা তৈরি করে জেরা করা হচ্ছে বালুকে। আর মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও যে সব তথ্য সামনে আসছে, তার ভিত্তিতে আরও অনেক জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। এই আবহে গত শনিবারই উলুবেড়িয়া, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক চালকল, আটাকলে তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি। সেদিনই অঙ্কিতের অফিসে হানা দেয় ইডি। এই সংস্থার মালিক অঙ্কিত চন্দ্র জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে। আবার হিতেশ নামক এক ব্যক্তির বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ইডি। জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালের পশু খাদ্য কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হয়েছিল এই হিতেশের আত্মীয় দীপেশ।
এদিকে ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সল্টলেকের একটি বাড়িতে জ্যোতিপ্রিয় ও বাকিবুরের বৈঠক হত। ইডির তথ্য অনুযায়ী, বৈঠক হওয়া বাড়িটা একজন প্রোমোটারের। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কনভয় সেখানে আসত। ওখানে বাকিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক চলত। খাদ্য ভবন থেকে বেরিয়ে কনভয় করে ওই বাড়িতেই আসতেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গোটা বাড়িতেই ছিল সিসিটিভি। ইডি আরও দাবি করেছে, ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত রাজ্যের ১২ হাজারেরও বেশি ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটর, রেশন দোকানের মালিকের নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছিল। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই এক দশকে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ ইডির। আর তদন্তকারীরা বলছেন, এই গোটা নেটওয়ার্কের মাস্টারমাইন্ড নাকি মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নিজেই। ইডির বক্তব্য, যে পরিমাণের দুর্নীতি হয়েছে, তা খাদ্য দফতরের মদত ছাড়া করা অসম্ভব।