করোনায় মৃত রোগীর পরিবারের হাতে বিপুল পরিমাণে বিল ধরানোর অভিযোগ উঠল ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। বিলের অঙ্ক দেখে রীতিমতো অসহায় অবস্থা মৃতের আত্মীয়দের। অভিযোগ, হাসপাতালের তরফে ৩৬ ঘণ্টায় ১২ লাখ টাকা বিল ধরানো হয়েছে ওই পরিবারকে। যদিও তা পুনর্বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবুও কত টাকা ছাড় মিলবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে ওই পরিবার।
এ বিষয়ে ঢাকুরিয়ার ওই হাসপাতালের সিইও রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘একমো সাপোর্ট প্রচণ্ড ব্যয়বহুল পদ্ধতি। করোনা আক্রান্তদের বাঁচাতে এই একমো সাপোর্ট দিয়ে শেষ চেষ্টা করা হয়। রোগীকে একমো সাপোর্টে দেওয়ার আগে মেশিন ইনস্টলেশন করতেই প্রায় ছ'লাখ টাকা খরচ হয়ে যায়। তারপর আরও আনুষঙ্গিক বিভিন্ন খরচ তো রয়েছেই। শুরুর কয়েকদিনের খরচটা অনেক বেশি থাকে। পরে আস্তে আস্তে সেটা কমতে থাকে। তবুও আমরা ওই রোগীর পুরো বিলটি পুনরায় খতিয়ে দেখব।’
রোগীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৪ মে দুপুর ১২টা ১৮ মিনিট নাগাদ ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করানো হয় ৫৭ বছর বয়সী করোনা আক্রান্ত রোগী অসীম দত্তকে। ১৬ তারিখ দুপুর দুটো ৩০ মিনিট নাগাদ ওই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। এরপর পরিবারের লোকেরা ডেথ সার্টিফিকেট নিতে গেলে মোট ৩৬ ঘণ্টার হিসাবে তাঁদের হাতে ১১,৯৩,৮৬০ টাকার বিল ধরানো হয়! যা দেখে মাথায় হাত পড়ে যায় মৃতের আত্মীয়দের।
মৃতের এক আত্মীয় জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অসীম। তড়িঘড়ি তাঁকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। সেখানে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন রোগীকে ‘একমো সাপোর্ট’ দিতে হবে। কিন্তু ওই হাসপাতালের কাছে সেই সুবিধা নেই বলেও জানিয়ে দেয় তারা। এরপর পরিবার ঢাকুরিয়ার ওই বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। হাসপাতালের তরফে তাঁদের রোগীকে একমো সাপোর্টে রাখার জন্য ২১ দিনে ৪১ লাখ টাকার খরচ হবে বলে হিসাব দেওয়া হয়েছিল। এও জানানো হয়েছিল, একমো সাপোর্টের জন্য দৈনিক খরচ ১ লাখ টাকার কিছু বেশি খরচ পড়বে। মৃতের পরিবারের দাবি, তাতে রাজি হয়ে ওই হাসপাতালে রোগীকে স্থানান্তর করা হয়েছিল। একই সঙ্গে ৩ লাখ টাকা অগ্রিমও জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভরতি হওয়ার ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় অসীমের। পরিবারের লোকেরা ভেবেছিলেন, ৩৬ ঘণ্টার হিসাব ধরলে, হাসপাতাল থেকে কিছু টাকা হয়তো ফেরতও পাবেন তাঁরা। কিন্তু বিল নিতে গিয়ে মাথায় হাত পড়ে যায় রেগীর আত্মীয়দের।