আবার কি বাংলাকে বঞ্চনা করার পথে হাঁটল মোদী সরকার? এই প্রশ্ন এখন উঠতে শুরু করেছে রাজ্যে। কারণ এবার বাংলার প্রায় এক লক্ষ প্রবীণ নাগরিকের বার্ধক্য ভাতা বন্ধ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার বলে অভিযোগ রাজ্য সরকারের। অথচ এখানে নির্দিষ্ট কোটা মেনেই কেন্দ্রীয় অর্থ সাহায্য করা হয়। এখন প্রায় ১ লক্ষ উপভোক্তাকে বার্ধক্য ভাতা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। যদিও এই বাদের কারণ ব্যাখ্যা করেনি কেন্দ্র বলে দাবি করল রাজ্য প্রশাসন। এই খবর চাউর হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ একদিকে ব্যাঙ্কের সুদ কমেছে। অন্যদিকে রাজ্যে নানা প্রকল্পের টাকা বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যে এবার কোপ পড়ল বার্ধক্য ভাতাতেও।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? নবান্ন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত দফতরের মাধ্যমে যাঁরা বার্ধক্য, বিধবা এবং বিশেষভাবে সক্ষম ভাতা পেয়ে থাকেন সেই টাকার একটা অংশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ন্যাশনাল সোশ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রামের অধীনে রাজ্যগুলিকে এই টাকা দিয়ে থাকে কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলায় এক হাজার টাকার মধ্যে রাজ্য সরকার দেয় ৭০০ টাকা আর ৩০০ টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু ৮০ বছরের বেশি বয়স্কদের কেন্দ্র দেয় ৫০০ টাকা। বাংলায় যার কোটা ছিল ২০.৬৭ লক্ষ। ২০২২–২৩ অর্থবর্ষের একটি কিস্তি আর ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষের প্রথম কিস্তি মিলিয়ে মোট ৪২২ কোটি টাকা রাজ্যকে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলার নতুন কোটা বেঁধে দিয়েছে মোদী সরকার। সেই সংখ্যাটা ১৯.৭১ লক্ষ। সুতরাং এক কোপে বাংলার এক লক্ষ প্রবীণ নাগরিকের বার্ধক্যভাতা বন্ধ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার।
আর কী জানা যাচ্ছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ইতিমধ্যেই বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা দেওয়ার উপর জোর দিয়েছেন। দুয়ারে সরকার কর্মসূচির মাধ্যমে এই ভাতা দেওয়ার প্রক্রিয়া বেড়েছে। আগের থেকে সংখ্যা বেড়েছে বিধবা এবং বার্ধক্য ভাতার। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের এমন ভূমিকায় বঞ্চনার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পের মাধ্যমে বহু মানুষকে মাসে ১০০০ টাকা করে দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এছাড়া নানা সামাজিক প্রকল্প তো রয়েছেই। কিছুদিন আগে আদিবাসীদের একটা স্কলারশিপ বন্ধ করেছিল মোদী সরকার। তখন তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চালু করেন মেধাশ্রী প্রকল্প।
আরও পড়ুন: ঘুরে গেল কুড়মি সমাজের নেতারা, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কোন কথা হল দু’পক্ষের?
ঠিক কী বলছেন পঞ্চায়েত দফতর? এবার প্রবীণ নাগরিকদের যেটুকু দিত কেন্দ্রীয় সরকার তাতেও কোপ পড়ল। অনেকে মনে করছেন, এই উপভোক্তাদের এখনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার সংযোগ হয়নি। তাই এটাকে সামনে রেখে কোটা কমিয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। এই বিষয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে দাবি, বাংলার মানুষকে চাপে ফেলতে এটাও কেন্দ্রের এক কৌশল। মানুষই এসব কিছুর জবাব দেবে। সেপ্টেম্বর মাসে আবার দুয়ারে সরকার শিবির বসবে। সেখানে বার্ধক্য ভাতাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।