দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হল। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর মিলল সাফল্য। অবশেষে শিক্ষিকা পদে নিয়োগপত্র পেলেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা রায়। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও চার মাস পর নিয়োগপত্র পেল অনামিকা। গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার পর ২ ঘণ্টার মধ্যে ওয়েবসাইটে অনামিকার নাম তোলে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। আজ, বুধবার ডিরোজিও ভবনে নিজে এসে নিয়োগপত্র হাতে নেন অনামিকা রায়। শিক্ষকতাই একমাত্র স্বপ্ন অনামিকার। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হল। আজ নিয়োগপত্র নিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতরে হাজির হন অনামিকা। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর চাকরিতে যোগ দিতে চলেছেন শিক্ষিকা অনামিকা রায়।
এদিকে তৎকালীন মন্ত্রী কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর জায়গায় ববিতা সরকার চাকরি পান। কিন্তু নম্বরে হেরফেরের জন্য তা বাতিল হয়ে যায়। এবার ববিতার পর চাকরি পেলেন অনামিকা রায়। মেধাতালিকায় নাম থাকা পরবর্তী দাবিদার হিসেবে মামলা করেন অনামিকা রায়। আর তাতেই মেলে চাকরির সাফল্য। ববিতা সরকারের অ্যাকাডেমিক নাম্বার ত্রুটিপূর্ণ ছিল। তাই তাঁকে দেওয়া চাকরি ফিরিয়ে নেয় কলকাতা হাইকোর্ট। চলতি বছরের মে মাসেই সেই চাকরি অনামিকা রায়কে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মতো ১৮ সেপ্টেম্বর নোটিফিকেশন জারি করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বুধবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসে নিয়োগপত্র নিতে আসেন অনামিকা রায়।
অন্যদিকে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি ববিতা সরকারকে দেওয়া নিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যে। কিন্তু তারপরই ববিতার নিয়োগে ত্রুটি বেরিয়ে আসতেই সেটা বাতিল হয়। তখন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অনামিকা রায়। অনামিকা রায় দাবি করেন, তিনি ববিতার চেয়েও ২ নম্বর বেশি পেয়েছিলেন। সুতরাং চাকরি পাওয়ার যোগ্য দাবিদার তিনি। তখনই ববিতার চাকরি বাতিল করে অনামিকাকে চাকরিতে নিয়োগের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আর ববিতাকে ৬ মাসের বেতন–সহ প্রাপ্ত অর্থ ফেরত দিতে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ডিএলএড কলেজে অফলাইনে ভর্তি বন্ধ, বড় পদক্ষেপ করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ
তবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ১৬ মে নির্দেশ দেন অনামিকা রায়কে তিন সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগ করতে হবে। কিন্তু তিন সপ্তাহের সেই সময়সীমা পেরিয়ে ৪ মাস হয়ে যায়। চাকরি পাননি অনামিকা রায়। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও অনামিকা রায় চাকরি না পাওয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তারপরই দ্রুততার সঙ্গে অনামিকা রায়কে নিয়োগ করার বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। আর আজ, বুধবার নিয়োগপত্র হাতে পেলেন অনামিকা রায়। পুলিশ ভেরিফিকেশনের কারণে নিয়োগ আটকে ছিল বলে আদালতে জানিয়েছে এসএসসি। আজ অনামিকা রায় নিয়োগপত্র হাতে নিয়ে বলেন, ‘শিক্ষকতা করাই আমার একমাত্র ইচ্ছে ছিল। তাই এই চাকরি পাওয়ায় আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হল।’