পেয়েছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা, পেয়েছেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। কিন্তু তাই বলে পার্থর দুর্নীতি মেনে নিতে নারাজ আমতলার শুভ্রা। প্রাক্তন মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়ার ২ দিন পরেও নিজের অবস্থানে অনড় তিনি। সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মানুষের রাগের স্বতস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর মাধ্যমে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর জোকা ESI হাসপাতাল থেকে পার্থবাবুকে বার করে নিয়ে আসেন ইডি আধিকারিকরা। হুইলচেয়ার থেকে সবে গাড়িতে উঠে বসেছেন পার্থবাবু। এমন সময় তাঁর দিকে উড়ে আসে একটি চটি। উলটো দিকে ক্ষোভে ফুঁসছেন এক মহিলা। মুহূর্তের মধ্যে পার্থকে ছেড়ে তাঁকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। প্রশ্ন করেন, কেন জুতো ছুড়লেন তিনি? ক্ষোভে ফুঁসতে ফুঁসতে মহিলা পালটা প্রশ্ন করেন, জানেন না, কেন জুতো ছুড়েছি? সেই ঘটনার ভিডিয়ো প্রায় সবাই দেখে ফেলেছেন। কিন্তু ঘটনার পর রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার বাসিন্দা শুভ্রা ঘড়ুই। মধ্যবিত্ত পরিবারের বধূ সংসারের সাত ঝামেলা সামলে সংমাধ্যমের জেরায় কার্যত জেরবার। কিন্তু তাঁকে ছাড়তে নারাজ সাংবাদিকরা।
চটির পর দিন প্রণাম পেলেন পার্থ, অনুগামীকে বললেন, ‘তোরা ভালো থাকিস’
এদিন তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে, ২ বার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পেয়েছি। তাই বলে পার্থবাবুর দুর্নীতিকে সমর্থন করতে পারব না। আমরা তো তবু খেতে পাচ্ছি। বাজারে জিনিসপত্রের যা দাম অনেকে তাও পাচ্ছে না। আর ওনারা ফ্ল্যাট কিনে কোটি কোটি টাকা সাজিয়ে রাখছেন।
শুভ্রাদেবী এদিন বলেন, ‘আমি যা করেছি তা সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। জুতো না ছুড়ে ওকে মালা দিয়ে বরণ করলে খুশি হতেন’?
ওই মহিলা এক সন্তানের জননী। তাঁর মেয়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। কিন্তু কেন এমন করলেন? জবাবে শুভ্রা ঘড়ুই বলেন, ‘এটা আমাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। হাজার ছেলেমেয়ে চাকরি পায়নি ওঁদের জন্য। তাঁদের সবার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। জুতোটা ওর মাথায় লাগলে শান্তি পেতাম।’ এই ঘটনায় ইডির বিশাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল।
গৃহবধূকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ, গ্রেফতার স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির ৪ জন
মঙ্গলবার জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে এসেছিলেন ওই মহিলাও। পার্থকে দেখেই তিনি নিজের পা থেকে দু’পাটি জুতো খুলে পর পর ছুড়ে মারেন পার্থকে লক্ষ্য করে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় তখন গাড়িতে ছিলেন।ফলে গাড়িতে লেগেছে জুতো। এই ঘটনার পরে ওই মহিলা বলেন, ‘ওঁদের কোটি কোটি টাকা আছে। কলকাতার একাধিক জায়গায় ফ্ল্যাট কিনেছে। বড় গাড়ি করে হাসপাতালে আসছে। এতে আমাদের সমস্যা হচ্ছে। আমরা ঠিক মতো ডাক্তার দেখাতে পারছি না। তাই জন্যই জুতো ছুড়েছি। জুতোটা ওর টাকে লাগলে শান্তি পেতাম।’