সারদা কাণ্ডে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সিবিআই জেরার দাবিতে দায়ের জনস্বার্থ মামলা খরিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ সব পক্ষের বক্তব্য শুনে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিককে।
সম্প্রতি সারদাকাণ্ডে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও তাঁকে সিবিআই জেরা করছে না বলে অভিযোগ করে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী দাবি করেন, সম্প্রতি সারদা মামলায় শুভেন্দু অধিকারী যোগ নিয়ে চাঞ্চল্যকর সব অভিযোগ করেছেন সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন। জেলের প্রিজনার্স ওয়েলফেয়ার অফিসারের মাধ্যমে কী ভাবে বাড়তি সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে ও ব্ল্যাকমেল করে শুভেন্দু তাঁর কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে তার উল্লেখ করেছেন তিনি। কিন্তু তার পরও শুভেন্দু অধিকারীকে জেরা করছে না সিবিআই। সারদাকাণ্ডে শুভেন্দুর যোগ খতিয়ে দেখতে অবিলম্বে তাঁকে সিবিআই জেরা করার প্রয়োজন। সেই নির্দেশ দিক আদালত।
ইচ্ছা মতো মেধাতালিকায় রদবদল করেছেন, বিস্ফোরক অভিযোগ শান্তিপ্রসাদের বিরুদ্ধে
পালটা শুভেন্দুবাবুর আইনজীবী বলেন, ‘সারদা মামলার তদন্তে গত ৯ বছরে একবারও শুভেন্দু অধিকারীর নাম আসেনি। সারদাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর প্রথম ১ বছর তদন্ত করেছিল রাজ্য পুলিশের সিট। তারা কখনও শুভেন্দু অধিকারীর নাম নেননি। এর পর তদন্তে নামে সিবিআই। তারা একের পর এক সাতটি চার্জশিট দিলেও তাতে কোথাও শুভেন্দু অধিকারীর নাম নেই। তাহলে হঠাৎ সুদীপ্ত সেন শুভেন্দুবাবুর নাম করতে লেগেছেন কেন? এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ রয়েছে।’
এই মামলায় সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘সারদাকাণ্ডের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। ফলে শুভেন্দু অধিকারীকে যে সিবিআই ভবিষ্যতে জেরা করবে না তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় কি? অনুমানের ভিত্তিতে কী করে মামলা দায়ের সম্ভব? সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক অভিসন্ধি থেকে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে মনে হয়।’ তিন পক্ষের বক্তব্য শুনে মামলা খারিজ করে শুভেন্দুকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারকে দিয়েছে আদালত।
বলে রাখি, মাস কয়েক আগে বিচারপতিকে দেওয়া একটি চিঠিতে জেলবন্দি সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন দাবি করেন, নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী তাঁকে জমি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে মোটা টাকা নিয়েছিলেন। এমনকী ব্ল্যাকমেল করেও তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন শুভেন্দু। এর পরই প্রশ্ন ওঠে, এত বছর পর কেন শুভেন্দুর নাম মনে পড়ল সুদীপ্ত সেনের? এর পিছনে কি শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদানের কোনও যোগাযোগ রয়েছে?