বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প সাড়া ফেলে দিয়েছে। কারণ গরিব মানুষ বেসরকারি নার্সিংহোমে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাচ্ছেন। এমনকী ভেলোরে গিয়েও এই কার্ডে চিকিৎসা করা যাচ্ছে। এমন হাতে গরম তথ্য থাকলেও আয়ুষ চিকিৎসা সরকার স্বীকৃত হলেও রাজ্যের কোনও আয়ুষ হাসপাতালকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনা হয়নি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প ‘সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট হেল্থ স্কিমে’ আয়ুষ চিকিৎসার সুবিধা পাওয়া যায়। সিজিএইচএস প্রকল্পটি কি সর্বসাধারণের জন্য? উঠছে প্রশ্ন। স্বাস্থ্যসাথী কেন আয়ুষ হাসপাতালগুলিকে অন্তর্ভূক্ত করছে না? এই প্রশ্নও উঠেছে।
এদিকে ২০১৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেন। তাতে পরিবারপিছু ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা করা হয়। এই ‘ক্যাশলেস’ বিমা পরিষেবা প্রকল্পে বহু মানুষ উপকৃত হয়েছেন। আয়ুষ চিকিৎসা পদ্ধতিতে আয়ুর্বেদ, হোমিয়োপ্যাথি, ইউনানি, যোগ, নেচারোপ্যাথি রয়েছে। অনেক আয়ুষ চিকিৎসকও রয়েছেন। রাজ্যে দু’টি বেসরকারি আয়ুর্বেদ হাসপাতাল, একটি বেসরকারি ইউনানি হাসপাতাল এবং ছ’টি বেসরকারি হোমিওপ্যাথি হাসপাতাল আছে। এদের মধ্যে অনেকেই বারবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে তালিকাভুক্ত হতে চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে।
অন্যদিকে আবেদন করলেও স্বাস্থ্যসাথীর অন্তর্ভূক্ত হতে পারেনি। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে ২০২১ সাল থেকে লাগাতার স্বাস্থ্য দফতর এবং মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি দিয়েছে ‘ন্যাশনাল আয়ুর্বেদ স্টুডেন্টস অ্যান্ড ইউথ অ্যাসোসিয়েশন’। তারাও কোনও উত্তর পায়নি বলে অভিযোগ। তবে এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। আমরা আর কিছু বলতে পারব না। অর্থ দফতরকে জিজ্ঞাসা করতে হবে।’ এখন বাংলার মানুষজন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা করিয়ে অত্যন্ত খুশি। কলকাতা এবং গ্রামবাংলায় এমন একাধিক নজির রয়েছে। আগে যাঁরা চিকিৎসা নিয়ে ভয় পেতেন এখন তাঁরা চিকিৎসা সহজে পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: সন্দেশখালি–সাধুদের মারধর নিয়ে অনুরাগের আক্রমণ, পাল্টা দিলেন তৃণমূলের শশী
এছাড়া ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত রাজ্য সরকার প্রায় ১০ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা দিয়েছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে। সরকারি আয়ুষ হাসপাতালগুলি স্বাস্থ্যসাথীতে ঢুকতে পারেনি। ইতিমধ্যেই ‘ইনশিয়োরেন্স রেগুলেটরি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ (আইআরডিএ) আয়ুষের মতো বিকল্প চিকিৎসাকে বিমার আওতায় আনতে দেশের বিমা সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে। আর ২০১৫ সালে আয়ুষ চিকিৎসা কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু এখন একটি প্রশ্ন উঠছে, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পেও কি আয়ুষ অন্তর্ভূক্ত?