ইতিমধ্যেই দল এবং বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বরাহনগরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তাপস রায়। এই ঘটনার পর থেকে রাজ্য–রাজনীতিতে পারদ চড়ছিল। সেটাই এবার চরমে পৌঁছল। আজ, সোমবার সকালে তাপস রায়ের মান ভাঙাতে যান কুণাল ঘোষ। দলের দুটি পদে ইস্তফা দিয়ে দলের হয়েই তিনি তাপস রায়ের কাছে গিয়েছিলেন কুণাল। কিন্তু তাপস রায়ের বাড়ির ড্রয়িং রুমে বসে যখন কুণাল ঘোষ ও ব্রাত্য বসু কথা বলছেন, তখনই নাকি কুণালের কাছে আসে দলের ‘শোকজ লেটার।’ সংবাদমাধ্যমকে এই কথা জানিয়েছেন তাপস রায়।
এদিকে দূত হিসাবে তাপস রায়ের বাড়িতে পৌঁছে যান ব্রাত্য বসু এবং কুণাল ঘোষ। দীর্ঘ বৈঠকের পর মান ভাঙাতে পারলেন না দুই নেতা। এই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তাপস। তিনি জানান, দলে অবহেলিত, উপেক্ষিত এবং অসম্মানিত। সুতরাং ব্রাত্য, কুণালের ‘দৌত্য’ যে কাজে লাগেনি সেটা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট। তবে কুণাল ঘোষের শোকজ হওয়ার বিষয়টি প্রত্যাশিতই ছিল। কারণ এক্স হ্যান্ডেলে যেভাবে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলোধনা করছিলেন তিনি তাতে লোকসভা নির্বাচনের আগে ভুল বার্তা মানুষের কাছে যাচ্ছিল বলে মনে করে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই এই শোকজ লেটার। আর দলের অন্দরে কুণাল সুব্রত বক্সির বিরোধী।
আরও পড়ুন: বিধানসভায় ইস্তফা দিতে গেলেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়! যোগ দেবেন বিজেপিতে?
অন্যদিকে কুণালের বদলে বক্সিকে পূর্ব মেদিনীপুরে ‘জনগর্জন সভা’র প্রস্তুতি বৈঠকে পাঠানো নিয়ে কুণাল ঘোষ প্রকাশ্যেই তাঁর ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। তাই বক্সিকে দিয়ে তাঁকে শোকজ করানোর সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে তাপস রায় বলেন, ‘এই দলে যাদের সাসপেনশন হওযার কথা, শোকজ করার কথা, বহিষ্কার করার কথা, তারা বহাল তবিয়তে আছে।’ সম্প্রতি সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কুণাল ঘোষের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। দলের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র পদে ইস্তফা দেন কুণাল ঘোষ। ভুবনেশ্বরে এইমসে থাকাকালীন সুদীপের চিকিৎসার খরচ কে দিয়েছিল সেটা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন কুণাল। যা দলকে অস্বস্তিতে ফেলে।
এছাড়া কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংসদের টিকিট দেওয়ার বিরোধিতা করে আসরে নামেন তাপস রায়। তার পর থেকেই তাঁর সম্পর্কে দলের ভিতরে–বাইরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল দলত্যাগ নিয়ে। তাপস আজ সাংবাদিকদের সামনে দাবি করেন, ‘ওরা যখন আমাকে বোঝাতে এসেছিল, তার মধ্যেই সুব্রত বক্সি শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছেন কুণালকে। কুণাল ও ব্রাত্য দু’জনেই আমার ভাইয়ের মতো। ওরা আমার সঙ্গে কথা বলতে এসেছিল। মাঝেমধ্যেই আসে। রাজনীতিতে আমার সততা কারও অজানা নয়।’ কুণাল সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘আমার কোনও অভিমান নেই। আমি জীবনে উত্থান–পতন, স্বর্গ–নরক দেখেছি। তাই আমি সব কিছুকে স্বচ্ছভাবে দেখতে চাই। সেটাই হয় মুশকিল।’