কথা দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে নয়াদিল্লি গিয়ে গরিব মানুষের প্রাপ্য টাকা আদায় করে আনবেন। ইতিমধ্যেই ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, গ্রাম সড়ক যোজনা–সহ নানা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দাবি, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে প্রাপ্য রয়েছে ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকার উপরে। তাই বাংলাকে বঞ্চনার প্রতিবাদে আগামী ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তীর দিন নয়াদিল্লির বুকে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু তাতে আজ অনুমতি দিল না দিল্লি পুলিশ।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েন নিজের সংসদের প্যাডে চিঠি লিখে ধরনার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন। পার্লামেন্ট স্ট্রিট পুলিশ স্টেশনে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। পুলিশের ডিসি–কে চিঠি লেখেন ডেরেক। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, কৃষি ভবনের বাইরে ধরনায় বসতে চান। ২ এবং ৩ অক্টোবর এই ধরনা কর্মসূচির কথা উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। ১০০ দিনের কাজের টাকা না পাওয়ার জন্য এই ধরনা কর্মসূচি বলে জানানো হয় চিঠিতে। কিন্তু সেই ধরনার অনুমতি দিল না পুলিশ। আজ তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে এই কর্মসূচি নিয়ে এখন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রস্তুতি তুঙ্গে উঠেছে। ওইদিনই আবার বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষ থেকে নয়াদিল্লির রাজঘাটে গান্ধীজির স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পরে ‘অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি’র ঘোষণা করা হতে পারে। আর তাই তৃণমূল কংগ্রেসের ঘোষিত কর্মসূচি ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রতিবাদ সভায় পরিণত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। মহিলাদের একটি বড় অংশকে সেই কর্মসূচিতে নয়াদিল্লিতে নিয়ে যেতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়ে বাংলার মহিলাদের অপমান করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বলে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের দাবি। তাই মহিলা সমাজের প্রতিনিধিরা দেশের রাজধানীর বুকে হাজির হয়ে সে কথা জানাবেন গোটা দেশকে। এমনটাই ঠিক হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘প্রতিবাদ রাজভবনের ভিতরে এসে করতে পারেন’, মুখ্যমন্ত্রীকে বার্তা দিলেন রাজ্যপাল
তাহলে কি ধরনা কর্মসূচি হবে? এই নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। তবে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। দিল্লির পুলিশকে আরও একটা চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতমন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের বাসভবন ২৭, লোধি এস্টেটের বাইরে ধরনায় বসতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। তাতেও অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আজ তীব্র ধিক্কার জানিয়ে বলেন, ‘একের পর এক নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে হেরে গিয়ে বিজেপি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছে। মানুষের টাকা দেবে না বলে পণ করেছে কেন্দ্রের সরকার। আবার তা নিয়ে আন্দোলনও করা চলবে না! প্রতিশোধ নিতে দিল্লি পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না প্রতিবাদ করতে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অঙ্গুলিহেলনে এই কাজ করা হচ্ছে।’